খেতের ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক, কেটে দিল ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
এরফান হোছাইন. জেলা প্রতিনিধি (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: বুধবার ২২শে এপ্রিল ২০২০ ১০:৪২ অপরাহ্ন
খেতের ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক, কেটে দিল ছাত্রলীগ

হাফেজ আহমেদ একজন অসহায় দরিদ্র কৃষক। পাকা ধান পড়ে আছে ফসলের মাঠে। করোনায় শ্রমিক ও অর্থ সংকট সেই পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে ছিলেন চরম দুশ্চিন্তায়। অবশেষে দরিদ্র এই কৃষকের দুশ্চিন্তা দূর করে দিলেন ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ও কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি ছাত্রলীগের সভাপতি মইন উদ্দিনের নেতৃত্ব ৩০ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দেন।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) সারাদিন কেটে দুই কানি পরিমাণের ফসল কেটে দেন তারা। কৃষক হাফেজ আহমদের বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের রাস্তারপাড়া এলাকায়।

কৃষক হাফেজ আহমেদ জানান, তিনি এবার দুই কানি (৮০ শতক) জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছে। ক্ষেতের ফসলে পাক ধরেছে কিন্তু ধান কাটার মজুরের অভাব। এ অবস্থায় প্রতিবেশী ছাত্রলীগ নেতা অনিককে বলেছিলেন কষ্টের কথা। কিন্তু অবাক হয়ে দেখেন আকস্মিক কাঁচি হাতে একদল ছাত্র উপস্থিত ধান কাটতে।

ছাত্রলীগ নেতা মইন উদ্দীন বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নির্দেশ দিয়েছে কৃষকদের পাশে থাকতে। ছাত্রলীগ যেকোনো মানবিক সঙ্কটে সাধারণ মানুষের পাশে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের মাধ্যমে খবর পাই শ্রমিক সংকটের কারণে হাফেজ আহমেদ তার পাকা ধান কাটতে পারছে না। বৈশাখী মাস, তাই যে কোনো সময়ে ঝড়-বৃষ্টি হলে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আমরা ছাত্রলীগের ৩০ নেতাকর্মী কাচি-মাথাল নিয়ে হাজির হই। সারাদিন কাজ করে ২ কানি জমির ধান কেটে দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, প্রথমে ওই কৃষক বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না, আমরা বিনা পারিশ্রমিকে তার ধান কেটে ঘরে তুলে দেব। পরে যখন তার জমির ধান কেটে বাড়িতে এনে দিলাম তার মুখের হাসি আমাদের অন্যরকম আনন্দ দিয়েছে। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছুই নেই। এই দুঃসময়ে প্রত্যেকের উচিত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো।

কৃষক হাফেজ আহমেদ বলেন, ‘একজন শ্রমিকের মজুরি ৫/৬’শ টাকা। তার উপর দুই বেলা ভাত দিতে হয়। এই ছেলেগুলো আমার বড় উপকার করে দিয়ে গেছে। তাদের জন্য কিছুই করতে পারলাম না, তবে মন থেকে দোয়া করছি।’

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব