বরিশালের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২০ উপলক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে ৯ মার্চ দুপুরে ১টায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ মামুন অর রশীদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমীনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসাঃ নাজমা বেগম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল গাফফার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী সফিউল আলম, কর্মরত ডাক্তারগণ, সেনেটারি ইনেসপেক্টর শহিদুল ইসলাম,নার্স,
সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, ইমাম, ইউপি প্রতিনিধি এবং ইপিআই এর কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।সভায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ মামুন অর রশীদ জানান, ৯ মাস থেকে শুরু করে ১০ বছরের কমবয়সী সকল শিশু এই টিকা নিবে। পূর্বে হামের টিকা পেয়ে থাকলেও অথবা হাম-রুবেলা রোগে আক্রান্ত হলেও ঐ বয়সের সকল শিশুকে ১ ডোজ হাম-রুবেলা টিকা দেয়া হবে। তিন সপ্তাহ ব্যাপি পরিচালিত হবে হাম-রুবেলা(এম আর) টিকাদান ক্যাম্পেইন। ১৮ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ প্রথম সপ্তাহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকাদান ক্যাম্পেইন চলবে। যে শিশু স্কুলে যায় না কিংবা স্কুলে টিকা গ্রহণ করেনি, তাদেরকে ২য় ও ৩য় সপ্তাহে নিয়মিত, স্থায়ী ও অতিরিক্ত টিকাদান কেন্দ্র গুলোতে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ১ ডোজ হাম-রুবেলা টিকা প্রদান করা হবে।
হাম এবং রুবেলা ভাইরাস জনিত দুটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এই দুটি রোগ সাধারণত একজন আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে তার সংস্পর্শে আসাঅন্যদের মধ্যে দ্রুত ছড়ায়। শিশু ছাড়াও যেকোনো বয়সের মানুষের হাম-রুবেলা হতে পারে। তবে শিশুদের মধ্যেই হাম-রুবেলার প্রকোপ, জটিলতা এবং মৃত্যু বেশি দেখা যায়। গর্ভবতী মা প্রথম ৩ মাসের সময় রুবেলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে মা থেকে গর্ভের শিশু আক্রান্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে গর্ভপাত এমনকি গর্ভের শিশুর মৃত্যু হতে পারে। হাম-রুবেলা রোগ এবং এদের জটিলতার হাত থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে সঠিক সময়ে শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দিয়ে সুরক্ষিত করা।
হাম রোগ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ২০০৬ সালে ক্যাচ-আপ এবং ২০১০ সালে ফলো-আপ ক্যাম্পেইন করার ফলে হামের প্রাদুর্ভাব বহুলাংশে কমে যায়। ২০১২ সাল থেকে রুবেলা নিয়ন্ত্রণে হামের টিকার সাথে রুবেলা টিকা সংযোজন করে হাম-রুবেলা টিকা দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে হাম ও রুবেলা দূরীকরণে এমআর টিকাদান ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়। এই ক্যাম্পেইনের ফলে হাম-রুবেলার প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কমে যায়।
কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে দেশব্যাপী হাম রোগের প্রাদুর্ভাব পুনরায় বৃদ্ধি পায়। হাম রোগের এই বিস্তার বন্ধ করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশব্যাপী হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ক্যাম্পেইনের আরো একটি উদ্দেশ্য হলো কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা। এলাকার একটি শিশুও যদি এই টিকা থেকে বাদ পড়ে তাহলে তার পাশাপাশি অন্য শিশুরাও হাম-রুবেলার ঝুঁকিতে থাকবে। তাই এই ক্যাম্পেইন সফল করতে সকল শিশুর হাম-রুবেলা টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।