ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মেঘনা নদী ও জেগে ওঠা ডুবো চরে সংশ্লিল্ট প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় মশারি জাল, বিহিন্দী ও কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে চিংড়ির রেনু পোনা (গলদা, বাগদা চিংড়ি) নিধন কমার বদলে বরং দিনে দিনে বাড়ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত এসব রেনু পোনা ধরতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মাছের রেনু পোনা ধ্বংস হচ্ছে প্রতিদিন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে হাসাননগন, পক্ষিয়া ও বড়মানিকা ইউনিয়ন সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায় শত শত কিশোর, যুবক বয়সের লোকদের মাছ ধরতে দেখা গেছে। ডানে-বাঁয়ে যে পর্যন্ত দৃষ্টি যায় পানির মধ্যে পুরো শরীর আর পানির উপর শুধু মানুষের মাথা দেখা যাচ্ছে। নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশত ক্রয়কেন্দ্র হাসাননগন ইউনিয়নের হাকিমুদ্দিন বাজারের রিং বেড়ীর উপর এক ইউপি সদস্যকে টিন শেড ঝুপড়ি ঘরে রেনু পোনা মজুদ করতে দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে জানান,ওই স্থানে প্রায় দুই লাখ রেনু পোনা মজুত আছে। ক্যামেরা দেখে কাছের রেনু পোনা সংগ্রহকারীরা দৌড় দিলে এক লোক তাদের থামতে বলে। তিনি জীবিকার প্রয়োজনে তারা ওই কাজ করে দাবী করে সাংবাদিকদের একটা প্রস্তাব দিয়ে সড়ে যেতে বলে রেনু সংগ্রকারীদের নদীতে নামতে বলেন। সাংবাদিকরা প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তিনি নিজেই সটকে পড়েন।
জানা যায়, নিষিদ্ধ রেনু পোনা সড়ক ও নদী পথ দিয়ে বড় বড় ড্রাম কিংবা পাতিল ভর্তি করে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে চালান হয়। মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, একটি চিংড়ির রেনু পোনা (পিএল-পোস্ট লাম্বা) ধরার জন্য অন্য প্রজাতির নয় থেকে ১২টি রেনু পোনা ধ্বংস করা হচ্ছে। এরমধ্যে দুই হাজার প্রজাতির মাছ, বিভিন্ন প্রকারের জলজপ্রাণি, খাদ্যকণা প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে। এ কারণে হুমকির মুখে পড়ছে নদীর বাস্তুসংস্থান। সংকটে পড়ছে মাছ ও জলজ প্রাণি। বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন, মৃজাকালু মাছ ঘাট, স্লুইজ গেইট ঘাট, নবাব মিয়ার ঘাট, আলীমুদ্দিন ঘাট ও বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় রেনু পোনা কেনার দোকানের আধিক্য বেশী।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির জানান, কতিপয় প্রভাবশালী দালাল জেলেদের একপ্রকার জোরপূর্বক বাধ্য করে বিহিন্দী জাল, মশারী জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে দেদারছে রেনু পোনা নিধন করাচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুস সালেহীন দাবি করেন, তাদের নজরদারী আছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নিয়ে এ মাসে ২-৩ টি অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান আরো জোরদার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।