জুমা (শুক্রবার) ইসলামি সমাজে আল্লাহর বিশেষ দান হিসেবে বিবেচিত। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন এবং অন্যান্য দিনের তুলনায় জুমার দিনটির মর্যাদা অসীম। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে এই দিনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিনের নামাজের আহ্বান শোনা যাবে, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে এগিয়ে যাও এবং সমস্ত দুনিয়াবি কাজকর্ম ত্যাগ করে মসজিদে চলে যাও। এটি তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানত।” (সূরা জুমা- ৯)
জুমার দিনটি কেবল মুসলিমদের জন্য বিশেষ একটি দিন নয়, এটি সাপ্তাহিক ঈদের সমতুল্য। হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।” (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৯৮)
এই দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যা মুসলিমদের জীবনে আধ্যাত্মিক উন্নতি এনে দেয়। আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করবে, মসজিদে আসবে, ইমামের কাছে বসবে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনাবে, তার জন্য এক বছরের নফল রোজা ও এক বছরের নফল নামাজের সওয়াব প্রদান করা হবে।” (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)
এছাড়া, জুমার নামাজ না পড়ার শাস্তির কথাও হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি পর পর তিন জুমা পরিত্যাগ করবে, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর এঁটে দেবেন।” (বুখারি, হাদিস : ১০৫২) এই হাদিস থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায়, নিয়মিত জুমা নামাজ পড়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
তবে, যেসব লোক জুমা নামাজ থেকে মুক্ত, তারা হলেন ক্রীতদাস, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক, মুসাফির এবং রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ) এসবের বাইরে থাকা মুসলিমদের জন্য জুমা নামাজ ত্যাগ করা বড় গোনাহ হিসেবে বিবেচিত।
নামাজ, বিশেষত জুমা নামাজ, মুসলিমদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং এটি ইসলামের মূল স্তম্ভের মধ্যে একটি। হজরত উমর (রা.) বলতেন, “নামাজ ত্যাগকারী নির্ঘাত কাফের।” (বায়হাকি) একইভাবে, হজরত আলি (রা.) বলেছেন, “যে নামাজ পড়েনা, সে কাফের।” (বায়হাকি) এই বক্তব্যগুলো মুসলিমদের জন্য এক কঠিন সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করে, যে নামাজের প্রতি আমাদের সচেতনতা এবং গুরুত্ব বাড়ানো উচিত।
অতএব, জুমার দিনটি যথাযথভাবে পালন করা মুসলমানদের জন্য একটি ধর্মীয় দায়িত্ব এবং এটি আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা অর্জনের এক সুযোগ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।