প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১৫:৮
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। রবিবার সকালে ঢাকার সেনাসদরে ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৫’-এর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই পর্ষদের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা ও নেতৃত্বের গুণাবলির ভিত্তিতে উপযুক্ত কর্মকর্তাদের উচ্চতর পদে উন্নীত করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদ, যুদ্ধাহত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ড. ইউনূস। বিশেষভাবে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শহিদ ও বীর সেনাদের স্মরণ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের সময় শহিদ ও আহত সেনাসদস্যদের পাশাপাশি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণ-আন্দোলনে প্রাণ হারানো ছাত্র-জনতার কথা স্মরণ করে তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানান।
তিনি নির্বাচনী পর্ষদের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, পেশাগত যোগ্যতা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দিতে হবে। নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের পাশাপাশি নিযুক্তিগত উপযুক্ততা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। তিনি মনে করিয়ে দেন যে শুধুমাত্র রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নয়, বরং সামরিক জীবনে ধারাবাহিক সফল নেতৃত্ব প্রদানে সক্ষম কর্মকর্তাদেরই পদোন্নতির জন্য বাছাই করা উচিত।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুধু সীমান্তরক্ষা বা যুদ্ধকালীন সময়েই নয়, বরং দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তা এবং জাতীয় স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অতুলনীয় ভূমিকা রেখে চলেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, একটি পেশাদার, দক্ষ ও নীতিবান সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা ও অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। এজন্য যারা সেনাবাহিনীতে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ এবং সেবার মানসিকতা থাকা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি সেনাবাহিনীর বর্তমান কাঠামো ও শৃঙ্খলার প্রশংসা করে বলেন, সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে বাহিনী অত্যন্ত সংগঠিতভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা সেনাপ্রধানসহ সকল সেনাসদস্যকে তাদের ত্যাগ, নিষ্ঠা ও অবদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আগামীতেও দেশের শান্তি, অগ্রগতি ও গণতন্ত্র রক্ষায় অবিচল থাকবে।