পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলা ১৪৩২ সালের প্রথম দিনকে সামনে রেখে রোববার (১৩ এপ্রিল) এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি এ শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, “শুভ নববর্ষ ১৪৩২। বাংলা নববর্ষের এ আনন্দঘন উপলক্ষে আমি দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। ‘পহেলা বৈশাখ’ বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম অনন্য ও লালিত উৎসব। এটি কেবল একটি ক্যালেন্ডারের সূচনাই নয়, বরং আমাদের জাতীয় ঐক্য, সংস্কৃতি ও চেতনার এক মহা মিলনমেলা।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বংশগত পরিচয়, ধর্ম কিংবা বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি নববর্ষকে নতুন প্রত্যয় ও নবচেতনায় গ্রহণ করে থাকে। এটি এমন এক দিন, যখন মানুষ বিগত বছরের দুঃখ, হতাশা, ক্লান্তি ও ব্যর্থতাকে ঝেড়ে ফেলে নব আনন্দ, ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়।”
বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, মুঘল সম্রাট আকবর কৃষি কর ব্যবস্থাকে সহজতর করার জন্য বাংলা সন প্রবর্তন করেছিলেন, যা ‘ফসলি বছর’ নামে পরিচিত। সময়ের বিবর্তনে এই দিনটি ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবের প্রতীক হয়ে উঠেছে, যা বাঙালিদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য, সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও জাতীয় পরিচয়ের শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
নববর্ষ উপলক্ষে গৃহীত সকল আয়োজনের সাফল্য কামনা করে ড. ইউনূস বলেন, “২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছে, তা বাস্তবায়নের পথে আমাদেরকে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এই নববর্ষ আমাদের সামনে একটি অনুপ্রেরণার বার্তা নিয়ে এসেছে— আমরা যেন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশ নির্মাণে ঐক্যবদ্ধ থাকি।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর এই মুহূর্তে আসুন আমরা আমাদের অতীতের সব কষ্ট, ক্ষোভ ও বিভেদকে ভুলে গিয়ে একটি আশাবাদী ও ঐক্যবদ্ধ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি। এই নববর্ষ হোক আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গঠিত এক নতুন বাংলাদেশের পথচলার সূচনা।”
এ সময় তিনি দেশব্যাপী নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত অনুষ্ঠানমালার সফলতা কামনা করেন এবং দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য শান্তি, সুস্থতা ও কল্যাণের প্রার্থনা জানান।