ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশ কর্তৃক জব্দ করা ১৬টি গবাদিপশুর মধ্যে ৩টি গরু পুলিশের অবহেলায় মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গরুর মালিকরা অভিযোগ করেন, গরুগুলোর সঠিক পরিচর্যা না করায় এবং টাকা দাবি করার কারণে তাদের গরু মারা গেছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে গরুর মালিকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করে থানায় হাজির হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে ঠাকুরগাঁও শহরের ফেরারি এলাকার ১৬টি গরু স্থানীয়দের মাধ্যমে সদর থানা পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়। পরে, পুলিশ গরুর মালিক চিহ্নিত করতে আদালতের মাধ্যমে তদন্ত শুরু করে। তবে তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে উৎকোচ দাবি করায় গরুগুলোর দেখাশোনা সঠিকভাবে করা হয়নি।
গরুর মালিকদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা দাবি করেছে। প্রথমে ৫০ হাজার টাকা, পরে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, এবং সর্বশেষ তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল। গরু মালিকরা টাকা দিতে না পারায় গরুগুলোর সঠিক খাবার এবং যত্নের অভাব ঘটে, যার ফলে তিনটি গরু মারা যায়।
এ ঘটনার পর, গরুর মালিকেরা থানায় এসে মৃত গরুগুলোর ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশের অবহেলা এবং টাকা দাবির কারণে গরুগুলোর মৃত্যু ঘটেছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে সাত লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।
এক গরু মালিক সাবিনা খাতুন বলেন, তার একটি গাভী ছিল, যা প্রতিদিন ১৮-২০ লিটার দুধ দিত। তবে পুলিশ সেটি জব্দ করার পর খাওয়া-দাওয়া সঠিকভাবে না হওয়ায় গাভীটি মারা গেছে। তিনি আরও জানান, তার পরিবারের আয় এই গাভী থেকে আসতো, কিন্তু এখন তারা অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে, স্থানীয় সাংবাদিকরা এ ঘটনাটি ধারণ করতে গেলে পুলিশ কর্মকর্তা ওসি সহিদুর রহমান তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিথুন সরকার জানান, এই ঘটনার তদন্ত চলছে এবং পুলিশের অবহেলার কারণে গরুগুলোর মৃত্যু হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, তারা গরুর প্রকৃত মালিক চিহ্নিত করার জন্য প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন, তবে গরুগুলোর মৃত্যুর বিষয়ে তারা কিছু জানতেন না।
এদিকে, ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনাটি জানেন এবং গরু মালিকদের দ্রুত গরুগুলো ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেবেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।