পটুয়াখালীতে মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘অদ্ভুত’

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাকিবুল ইসলাম তনু, জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪০ অপরাহ্ন
পটুয়াখালীতে মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘অদ্ভুত’

পটুয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকর্মীদের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক ‘অদ্ভুত’। সোমবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাকিবুল হাসান, সহকারী নির্দেশনায় ছিলেন আশরাফিয়া ইসলাম তোশিবা। শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন সামিহা তাসনিম। নাটকটি প্রথম মুনীর চৌধুরী জাতীয় নাট্যোৎসব-২০২৫ এর অংশ হিসেবে মঞ্চস্থ হয়।  


বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগ দেশব্যাপী প্রযোজনা কেন্দ্রিক নাট্যকর্মশালা আয়োজন করছে। পটুয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ শীর্ষক নাট্যকর্মশালা থেকে নির্মিত হয়েছে এই নাটক। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোঃ মোতাহার হোসেন হাওলাদার, আব্দুল্লাহ আশরাফ অপূর্ব, স্বপ্নীল দাস, মোঃ শাহারিয়া, মেহেলী আফরোজ সুপ্তি, সুদিপ্ত ঘোষ, জান্নাতুল ফেরদৌসী, মেহেরুন্নেছা শান্তা, আরওয়া সাওদা, আহনাফ ইবনে সিয়ামসহ অনেকে।  


নাটকটির কাহিনিতে উঠে এসেছে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার প্রতিফলন। নাটকের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে, কিভাবে নতুন বাস্তবতায় মানুষ স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ পেলেও অতীতের দমন-পীড়নের ছায়া থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেনি।  


বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, জুলাই বিপ্লব দেশের রাজনৈতিক চিত্র বদলে দিলেও সমাজের গভীরে থাকা ক্ষতগুলো একদিনে মুছে যায়নি। মানুষের ভেতরের দ্বন্দ্ব ও সংগ্রামের গল্প এই নাটকে তুলে ধরা হয়েছে। শিল্পচর্চা সমাজের পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তাই নাটকের মতো মাধ্যমকে আরও বিস্তৃত করতে হবে।  


প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে মুনীর চৌধুরীকে নিয়ে নাট্যোৎসব আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত এই নাটক মুক্তচিন্তার প্রসার ঘটাবে।  


নাটকটির রচয়িতা ও নির্দেশক শাকিবুল হাসান বলেন, যে কথাগুলো সহজে বলা যায় না, সেগুলো নাটকের সংলাপে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। ‘অদ্ভুত’ একটি রাজনৈতিক বিদ্রূপাত্মক নাটক, যেখানে ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নাটকের মাধ্যমে মানুষকে ভাবতে বাধ্য করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।  


নাটকটি দেখে দর্শকদের প্রতিক্রিয়াও ছিল ইতিবাচক। অনেকে বলেন, বাস্তব ঘটনাবলির অসাধারণ উপস্থাপনা দেখতে পেয়েছেন এতে। নাটকের সংলাপ ও চরিত্রায়ন ছিল প্রাণবন্ত, যা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। নাট্যচর্চার বিকাশের জন্য এমন নাট্যোৎসব নিয়মিত হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন দর্শকরা।