বোরহানউদ্দিনে বর্ণালী হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৬ই জুলাই ২০১৯ ০৫:২৫ অপরাহ্ন
বোরহানউদ্দিনে বর্ণালী হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ

ঢাকার রামপুরার বনশ্রীতে গৃহবধু বর্ণালী মজুমদার বন্যা হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত, বিচার ও পুলিশের মামলা নিতে গরিমসির প্রতিবাদে বর্ণালীর জন্ম স্থান ভোলার বোরহানউদ্দিনে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় উপজেলা সদরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণালীর সহপাঠি বোরহানউদ্দিন সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বোরহানউদ্দিন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষাথীর্, বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী  বিক্ষোভ মিছিল সহকারে মানববন্ধনে অংশ নেন। পৌর শহরের বিভিন্ন শেণি পেশার লোক একাত্বতা প্রকাশ করে ওই মানববন্ধনে অংশ নিলে  প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা স্থবির হয়ে পড়ে।

মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,বোরহানউদ্দিন সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের অধ্যক্ষ এস,এম গজনবী, সহকারী অধ্যাপক রাখাল চন্দ্র মিস্ত্রী, বোরহানউদ্দিন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অণীল চন্দ্র দাস, বোরহানউদ্দিন উপজেলা মাধ্যামিক শিক্ষক সমিতির সম্পাদক মোঃ বশির উল্লাহ্, বোরহাউদ্দিন সরকারি মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের প্রাধান শিক্ষক  শাহ্ মো. নোমান প্রমুখ। এসময় বক্তারা বর্ণালী হত্যার সুষ্ঠ তদন্তে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টিকারী ঢাকা ডিএমপি কমিশনার অফিসে কর্মরত এসআই দীপক দে’র ভূমিকার নিন্দা করে বলেন, বর্ণালী হত্যার রাতেই বর্ণালীর স্বামী মিথুন দে (রাহুল) এর  খালাতো ভাই এস আই দীপক যাতে রামপুরায় থানায় মামলা না হতে পারে তার জন্য আগে ভাগেই বর্ণালীর লাশ হাসপাতালের মর্গে ফেলে রেখে মিথুন কে থানায় নিয়ে আটকের নাটক সাজায়। বর্নালীর পরিবার থানায় মামলা দিতে গেলে রামপুরা থানা-পুলিশের আচরণের নিন্দা করে তারা অবিলম্ভে বর্ণালী হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচী  দেয়া হবে বলে হুমকি দেন।। 

বর্নালীর পরিবার ও স্বজনরা জানান, বর্ণালীর রহস্যজনক মৃত্যুুর পর বর্ণালীর স্বামী মিথুন দে রাহুল,স্বশুর চুনি লাল দে,শাশুরি দিপ্তী রানী দে,দেবর প্রিতম চন্দ দে, কাজের মেয়ে ছায়া রানী দাস (টুম্পা) কে আসামী করে মামলা দিতে গেলে রামপুরা থানার ওসি মো. কুদ্দুস ফকির বলেন, আপনারা যদি শুধু মিথুন দে রাহুল কে আসামী করে মামলা দেন তাহলে মামলা নেবো। না হলে মামলা নেওয়া যাবে না। পরে বাধ্য হয়ে মিথুন কে আসামী করেই মামলা দিতে হয়। তারা বর্ণালী হত্যার সুষ্ঠ তদন্তে আশঙ্কা প্রকাশ করে এ ব্যাপারে প্রধান মন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 

উল্লেখ্য গত ৫ বছর পূর্বে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের বাবুল মজুমদারের মেয়ে বর্ণালী মজুমদারের সাথে পৌর ছয় নাম্বার ওয়ার্ডের চুনি লাল দে’র ছেলে মিথুন দে’র(রাহুল) সাথে পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায় প্রতিনিয়ত মিথুন ও মিথুনের পরিবার নিহত বর্ণালীকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করত। নির্যাতন করে কয়েকবার বাসা থেকেও বের করে দেয়। পরে বর্ণালী ঢাকায় স্বামীর বাসা থেকে চলে আসে বোরহানউদ্দিনে। বর্ণালীর স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বোরহানউদ্দিনে আসলে বর্ণালীর স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুরী বর্ণালীর মা-বাবাকে অনুরোধ করে বর্ণালীকে অনেকটা জোর করেই ঢাকায় বনশ্্রীতে স্বামীর বাসায় পাঠায়।

গত ২ জুলাই রাতে বনশ্রী এ ব্লকের ২ নাম্বার রোড সংলগ্ন নিজ বাসা থেকে রাত ১১ টার দিকে অচেতন অবস্থায় বর্ণালীর স্বামী মিথুন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। বর্ণালীর মৃত্যুর খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে বর্নালীর স্বামী মিথুন বর্ণালীর লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে রহস্যজনক কারণে  আগেই রামপুরা থানায় গিয়ে আটকের নাটক করে বলে অভিযোগ করেন বলে অভিযোগ আছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব