চালের দাম বৃদ্ধি, শীতকালীন সবজির বাজারে স্থিতিশীলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৪শে জানুয়ারী ২০২৫ ১২:০১ অপরাহ্ন
চালের দাম বৃদ্ধি, শীতকালীন সবজির বাজারে স্থিতিশীলতা

শীতকালীন শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে সবজির বাজারে স্থিতিশীলতা দেখা গেলেও চাল ও মুরগির ক্রমবর্ধমান দাম মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম বাড়তি অবস্থায় রয়েছে এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও ক্রমাগত বাড়ছে। এর ফলে বাজার করা ক্রেতাদের জন্য দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।  


বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে চালের দাম বাড়তি অবস্থায় রয়েছে। নতুন মৌসুমের আমন ধান, শুল্ক কমানো এবং আমদানি বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হলেও চালের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বর্তমানে মিনিকেট চাল মানভেদে ৮০ থেকে ৮২ টাকা এবং মোটা গুটি স্বর্ণা জাতের চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নাজিরশাইল চাল ৮৫ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে এবং ব্রি-২৮ ও পায়জাম জাতের চাল ৬০ থেকে ৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬০ টাকার নিচে কোনো চাল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।  


মুরগির বাজারেও ক্রমবর্ধমান দামের চাপ পড়েছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি এখন ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি জাতের মুরগি কিনতে হলে ক্রেতাদের কেজিপ্রতি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে, যা কয়েক সপ্তাহ আগেও ৩০০-৩২০ টাকার মধ্যে ছিল। তবে ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। বড় বাজারে ফার্মের ডিমের দাম প্রতি ডজন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা এবং পাড়া-মহল্লার দোকানে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  


সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও চাল ও মুরগির দাম বৃদ্ধি ক্রেতাদের আর্থিক পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলেছে। আলুর দাম বর্তমানে ২০-২৫ টাকার মধ্যে এবং পেঁয়াজ ৪০-৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য শীতকালীন সবজির মধ্যে বেগুন ৪০ থেকে ৫০, শিম ৩০ থেকে ৫০, শসা ২৫ থেকে ৩০, করলা ৫০ থেকে ৬০, গাজর ৪০ থেকে ৪৫ এবং লাউ ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।  


মুদি বাজারে ডালের দামেও স্থিতিশীলতা রয়েছে। আমদানি করা মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০ এবং দেশি মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুগডাল ১৬৫ থেকে ১৭০ এবং ছোলার কেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে রয়েছে। তবে চাল ও মুরগির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের জন্য বাজেট মেনে চলা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।  


বাজারে সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও আসন্ন রমজানে চাল ও মুরগির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ক্রেতারা। এতে তাদের ভোগান্তি আরও বাড়বে। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্রেতারা চান, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।  


বাজারে ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা বলছে, চাল ও মুরগির মতো পণ্যের দাম বাড়লে তা সব শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই বাজারে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং রমজান সামনে রেখে পর্যাপ্ত সরবরাহ বজায় রাখতে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্রেতারা মনে করেন, বাজারে পণ্যের দামে স্থিতিশীলতা থাকলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে।