মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বৈদ্যুতিক শকে আহত একটি গন্ধগোকুল উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) বিদ্যালয় মাঠে গাছ থেকে মাটিতে পড়ে আহত অবস্থায় প্রাণিটিকে পাওয়া যায়। স্থানীয় শিপন নামে এক ব্যক্তি ঘটনাটি দেখতে পেয়ে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনকে খবর দেন।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল জানান, গন্ধগোকুলটি বৈদ্যুতিক শকে আহত হয়ে মাটিতে পড়ে ছটফট করছিল। প্রাণিটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, বন-জঙ্গল কমে যাওয়ায় এ প্রাণীর সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
তাল খাটাশ বা গন্ধগোকুল বাংলাদেশের একটি বিরল নিশাচর স্তন্যপায়ী প্রাণী। এশিয়ান পাম সিভেট নামেও পরিচিত এ প্রাণীটি ফল, কীটপতঙ্গ, শামুক, ডিম, পাখির ছানা, তাল-খেজুরের রস ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে। কখনো কখনো খাদ্যের অভাবে মুরগি বা কবুতর চুরি করতেও দেখা যায়।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, গন্ধগোকুল কৃষকের জন্য উপকারী একটি প্রাণী। এটি ইঁদুর ও ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসলের ক্ষতি কমায়। গন্ধ উৎপাদনকারী গ্রন্থি থেকে সুগন্ধি তৈরির জন্য রস সংগ্রহ করা হয়, যা এই প্রাণীকে আরও মূল্যবান করে তোলে।
জানা যায়, দিনের বেলায় তাল খাটাশ বড় গাছের ডালে লম্বা হয়ে শুয়ে থাকে। নিশাচর এ প্রাণী সাধারণত রাতেই সক্রিয় থাকে। অন্ধকারে শত্রু বা খাবার শনাক্ত করতে এদের ঘ্রাণশক্তি অসাধারণ।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইনসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তাল খাটাশ দেখা যায়। বন-জঙ্গলের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে এদের টিকে থাকা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।
এ ধরনের প্রাণী রক্ষায় স্থানীয় মানুষদের সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক। এ ধরণের উদ্ধার কার্যক্রম বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।