ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনে ১৯ হাজার শিক্ষার্থী মৃত্যুমিছিলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ১লা জানুয়ারী ২০২৫ ১০:১৩ পূর্বাহ্ন
ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনে ১৯ হাজার শিক্ষার্থী মৃত্যুমিছিলে

ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনে মানবিক সংকট দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরও সাড়ে ২১ হাজারেরও বেশি। ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে এই গণহত্যার শিকার হয়েছে অসংখ্য শিশু-কিশোর।  


শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হতাহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছাড়াও ৫৪২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। একই সময়ে ৬৩০ জন শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মী নিহত এবং ৩ হাজার ৮৬৫ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ৪২৫টি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত ৬৫টি স্কুলও ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  


গাজা ও পশ্চিম তীরে চালানো এই হামলা শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ এবং গির্জাকেও ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই বর্বরতার ফলে গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটে থাকা গাজাবাসী এখন মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।  


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারের বেশি মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে ইসরায়েলের এ আগ্রাসন বন্ধের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হলেও ইসরায়েল তা উপেক্ষা করেছে।  


ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ বলেছে, এই হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।  


গত মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবে ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ এখনও দেখা যায়নি।  


ফিলিস্তিনের এই সংকট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এক গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলি হামলাকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।