দক্ষিণের কষ্ট দুর হচ্ছে , মেট্রোরেল যাচ্ছে সদরঘাটে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:১৮ পূর্বাহ্ন
দক্ষিণের কষ্ট দুর হচ্ছে , মেট্রোরেল যাচ্ছে সদরঘাটে

পুরান ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ জনপদের কথা বিবেচনা করে মেট্রোরেলের রুট পুনর্বিন্যাসের উদ্যোগ নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী এমআরটি লাইন-ফাইভ দক্ষিণ রুটের ওপর জোর দেওয়া হলেও, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কমিশন এমআরটি লাইন-টু রুটকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই রুটটি পুরান ঢাকার নাগরিকদের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


পরিকল্পনা কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “পুরান ঢাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানকার রাস্তাগুলো সরু এবং যানজটপ্রবণ, যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতে বিশাল সমস্যা তৈরি করে। তাই, পুরান ঢাকার জন্য একটি কার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থা তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এমআরটি লাইন-টু রুটটি পুরান ঢাকার যাত্রীদের সেবায় অনেক বেশি কার্যকর হবে।


পুরান ঢাকায় যানজট ও সরু রাস্তাগুলোর কারণে যাতায়াত সবসময়ই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এখানকার অসংখ্য ছোট রাস্তা, যাতায়াত ব্যবস্থা এবং সীমিত গণপরিবহন সেবা প্রতিদিনের জীবনে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলছে। মেট্রোরেল এই সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা পুরান ঢাকার ভেতরে এবং বাইরের এলাকাগুলোর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন করতে সহায়ক হবে। এমআরটি লাইন-টু উত্তরা থেকে শুরু হয়ে পুরান ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোকে সংযুক্ত করবে, যা এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের যাতায়াত সমস্যা কমাবে। 


অন্যদিকে, এমআরটি লাইন-ফাইভ মূলত ঢাকার দক্ষিণাঞ্চলের এলাকাগুলোতে যাত্রীসেবা দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত ছিল, যার মধ্যে মিরপুর এবং গাবতলীর মতো এলাকাগুলো অন্তর্ভুক্ত। তবে পুরান ঢাকার অতিরিক্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও গণপরিবহন ব্যবস্থার অভাবজনিত সমস্যা বিবেচনায় পরিকল্পনা কমিশন লাইন-টু রুটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী।


বিশেষজ্ঞদের মতে, এমআরটি লাইন-টু চালু হলে পুরান ঢাকার পরিবহনব্যবস্থা দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হবে। এতে যানজট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং যাতায়াতের সময় ও খরচ উভয়ই কমবে। পাশাপাশি, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা-বাণিজ্যও এই সংযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সুবিধা পাবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই রুট চালু হলে পুরান ঢাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রমে গতি আসবে এবং স্থানীয় পণ্যের বিপণন আরও সহজতর হবে।


পুরান ঢাকার বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা আশা করছেন, দ্রুত এমআরটি লাইন-টু বাস্তবায়িত হলে তাদের দৈনন্দিন জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। 


মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় লাইন-টু রুটকে অগ্রাধিকার দিয়ে এর সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনও এ বিষয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।