কক্সবাজারে সীমান্তে জব্দ করা প্রায় ৪০০ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বিজিবি। শুক্রবার (২৭ মে) দুপুরে কক্সবাজারের রামু ৩০ বিজিবির ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে এসব মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়।
ধ্বংস করা মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৯০ লাখ ৮০ হাজার ৪৭৭ পিস ইয়াবা, ২৩ কেজি ৭৫২ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ৬ হাজার ৭৬৭ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৩৩৯ বোতল মদ, ১৫৪ বোতল ফেনসিডিল, ২০৬ লিটার বাংলা মদ, ১৭ কেজি গাঁজা, ৪৮ হাজার ১৯ পিস বিভিন্ন প্রকার ট্যাবলেট, ১০ হাজার ৯৮৪ প্যাকেট সিগারেট এবং ৭ বোতল অ্যামোনিয়াম সালফার। এসব মাদকের বাজার দাম আনুমানিক ৩৯৫ কোটি ৭৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৫ টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির কক্সবাজার রিজিওনের আওতাধীন ব্যাটালিয়নগুলো গত এক বছরে মালিকবিহীন এসব মাদকদ্রব্য জব্দ করে।
এছাড়া বিভিন্ন সময় আটক করা ১ হাজার ৯৭৯ জন আসামিসহ প্রায় ৫১১ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য মামলার মাধ্যমে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।
হস্তান্তর করা মাদকদ্রব্য হলো- ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৩০ পিস ইয়াবা, ২৭ কেজি ৪৪৮ গ্রাম আইস, ১ হাজার ৩০৫ ক্যান বিয়ার, ৯৮ বোতল মদ, ১৩৭ বোতল ফেনসিডিল, ৫৮৬ লিটার বাংলা মদ, ২২ কেজি ৯৯৫ গ্রাম গাঁজা এবং ৩ হাজার ১৫০ কেজি। এসব মাদকদ্রব্যের আনুমানিক বাজার দাম আনুমানিক ৫১০ কোটি ৯০ লাখ ১৩ হাজার ৫৭২ টাকা।
এদিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবির অভিযানিক কার্যক্রম নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিবির কক্সবাজার রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম-উস-সাকিব। তারপর বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ। এসময় বিজিবি মহাপরিচালক তার বক্তব্যে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ও সার্বজনীন প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
এরপর প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাংলাদেশে ২৪ ধরনের মাদক আসে প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং মিয়ানমার থেকে। এর মধ্যে অধিকাংশই আসে মিয়ানমার থেকে। এ জায়গাটিতে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। দেশকে বাঁচাতে, যুব সমাজকে বাঁচাতে আমাদের কঠোর হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।
মন্ত্রী আরও বলেন, অপরাধী তো অপরাধীই। সে রাজনীতিবিদ হোক বা সমাজের স্বনামধন্য ব্যক্তি। তাই মাদক কারবার বন্ধে এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার জন্য বিজিবিকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘দেশে মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। মাদকের কারবার বন্ধে যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব। মিয়ানমারের সঙ্গে ২৮৩ কিলোমিটার দুর্গম সীমান্ত রয়েছে। সে জন্য বিজিবির আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তর করা হয়েছে। স্থল ও নদীপথে সক্ষমতা দিয়ে বিজিবি দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করছে।
মাদকদ্রব্য ধ্বংস অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, কানিজ ফাতেমা আহমেদসহ বিজিবি'র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, উচ্চপদস্থ সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।