নাইকো দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এই নিয়ে আটবার তাকে কারা আদালতে হাজিরা করা হলো। মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টা ২৩ মিনিটে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নং বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে হুইল চেয়ারে করে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। এই দিন মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া গত এক বছর ধরে কারাগারে বন্দি রয়েছেন। এর আগে সাতবার তাকে কারা আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, ৮ নভেম্বর ও ১৪ নভেম্বর এবং চলতি বছরের ৩, ১৩ ও ২১ জানুয়ারি এবং ৪ ফেব্রুয়ারি তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ মামলায় জব্দকৃত আলামত, সিডি ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কপি চেয়ে একটি আবেদন করেন। ওই দিন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তার নিজের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো অপরাধ করিনি। যারা অপরাধ করেছেন, তাদের বিচার হচ্ছে না। আইনি পয়েন্টে মামলার শুনানি শেষ করতে আরও দু'টি তারিখ লাগবে।’ আদালত বলেন, ‘একটি তারিখে শেষ করতে হবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি আপনি আপনার পক্ষের শুনানি শেষ করবেন।’ অপরদিকে, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা নাইকো দুর্নীতি মামলার জব্দকৃত আলামত, সিডি ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কপি চেয়ে আবেদন করেন। আদালত এ বিষয়ে ‘আদেশ পরে দেবেন’ বলে জানান। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন। মামলার পরের বছরের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ আসামি হলেন ১১ জন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।