প্রকাশ: ৯ অক্টোবর ২০২৩, ৩:১০
মাদারীপুরে ২০১৪ সালে মোটরসাইকেল চালক বোরহান মাতুব্বরকে (২৬) হত্যার দায়ে দুই আসামীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার বিকেলে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদাউস এই রায় দেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিল না কোন আসামী।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পাঁচখোলা গ্রামের আউয়ালী বেপারীর ছেলে সজিব বেপারী (২৯) ও একই গ্রামের আব্দুল খানের ছেলে মিঠুন খান (৩৩)। দোষ প্রমান না হওয়ায় খুলনা জেলার কয়রা এলাকার লাভলু গাজীকে (৩০) মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আসামীরা জামিনে বেরিয়ে এসে পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় কেউ উপস্থিত ছিল না।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে বিকেলে সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের পূর্ব রাস্তি গ্রামের রবিউল মাতুব্বরের ছেলে বোরহান মাতুব্বর জীবিকা নির্বাহের জন্যে একটি মেটরসাইকেল নিয়ে বের হন। এরপর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পরদিন সদর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে বোরহানের পরিবার। ০২রা জানুয়ারি বোরহানের মেটরসাইকেলটিসহ সজীব বেপারী ও মিঠুন খানকে সন্দেহমূলক হিসেবে আটক করে সাতক্ষীরা জেলার তালা থানা পুলিশ। আটকতৃতদের দেয়া স্বীকারোক্তিতে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদের কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বোরহানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ওই দিনই সজীব বেপারী, মিঠুন খান ও লাভলু গাজীকে আসামী করে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা বরিউল মাতুব্বর।
ওই বছরের ১০ জুলাই অভিযুক্ত তিনজনের নামে আদালতে চার্জশীট দেন তৎকালীন সদর মডেল থানার এসআই বারিউল করিম খান। পরে বিভিন্ন সময় এই মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর জবানবন্দি দেন আদালত। দীর্ঘ যুক্তি-তর্ক ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদাউস সজিব ও মিঠুনকে ফাঁসির আদেন দেন। পাশাপাশি প্রত্যেকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেন। এছাড়া দোষ প্রমান না হওয়ায় অপর আসামী লাভলু গাজীকে খালাস দেয়া হয়। রায়ে নিহতের পরিবার ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, বোরহানকে হত্যা করার মূল উদ্দেশ্য ছিল তার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করা। কিন্তু অপরাধ করে আসামীর সাতক্ষীরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। মামলার গ্রেফতারের পর দুইজনই দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। দ্রুত রায় কার্যকর করতে রাষ্ট্রপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।