ঝালকাঠি পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, আটক ৩ দালাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো. নাঈম হাসান ঈমন, জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: সোমবার ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, আটক ৩ দালাল

ঝালকাঠি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে তিন দালালকে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার দুপুরে পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কাওসার সিকদার নামে একজনকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ২ শত টাকা জরিমানা করা হয়, অন্য দুইজন মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।  


দুদক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্ট অফিসে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে দালালদের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরি করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। এই তথ্যের ভিত্তিতে দুদকের একটি দল ছদ্মবেশে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আনসার সদস্য ও দালালদের সঙ্গে কথা বলে। তখন তারা জানায়, পাসপোর্ট তৈরি করতে হলে নির্ধারিত ফি ছাড়াও বাড়তি টাকা দিতে হবে, যা দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও ভাগ করা হয়।  


দুদকের কর্মকর্তারা জানান, কথোপকথনের একপর্যায়ে তিনজন দালালকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে একজনকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয় এবং দুইজনকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযানের সময় আনসার সদস্যদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে, যা পরবর্তী সময়ে তাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হবে বলে দুদক জানিয়েছে।  


সহকারী কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, দালালদের মাধ্যমে পাসপোর্ট করানোর বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ আসছিল। এ কারণে দুদকের একটি দল অভিযান চালায় এবং প্রাথমিকভাবে তিনজনকে আটক করা হয়। তদন্ত শেষে একজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় শাস্তি দেওয়া হয়।  


অন্যদিকে, ঝালকাঠি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. তৌহিদ উল আরিফ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে এবং তার অফিসের কেউ যদি এই কাজে জড়িত থাকে, তবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  


দুদকের এই অভিযানের ফলে ঝালকাঠি পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমবে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। পাসপোর্ট করতে আসা অনেকে জানান, অতিরিক্ত টাকা না দিলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, অথচ দালালদের মাধ্যমে দ্রুত কাজ হয়ে যায়।  


পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা দরকার। পাশাপাশি, দালালদের সহযোগিতা করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ঘুষ ও দুর্নীতিতে লিপ্ত না হয়।