তীব্রগরম আর লোডসেডিংয়ে নাকাল বরিশালবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: রবিবার ১লা মে ২০২২ ০৬:৪৫ অপরাহ্ন
তীব্রগরম আর লোডসেডিংয়ে নাকাল বরিশালবাসী

বরিশালে হঠাৎ করেই বিদ্যুতের লোডসেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বর্ষা পূর্ববতীকালে যখন তাপদাহ বয়ে যায় এবং তাপমাত্রা যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে ঠিক সেসময়ই লোডসেডিংয়ের কবলে পরে বরিশালবাসী। দিন-রাত মিলিয়ে দিনে অন্তত ৩ থেকে ৪ বার লোডসেডিং হয় বিভিন্ন এলাকায়। একদিকে রমজান তার ওপর তীব্র তাপদাহ। গত সাত দিনে বরিশালে গড়ে তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মাঝে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মাঝে। 


তবে লোডসেডিংয়ের বিষয়টি মানতে নারাজ বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, রক্ষণাবেক্ষণ কাজের কারণে কোথাও কোথাও কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। তবে এপ্রিল মাসের ২ তারিখের পর বিদ্যুত বন্ধের ঘোষণা হয়নি বরিশালে। অথচ কোন এলাকায় বিদ্যুত বন্ধ থাকলে আগে থেকেই তা নোটিশ করার কথা।


সূত্রমতে, বরিশাল ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন (ওজোপাডিকো) ডিভিশন-১ ও ২ মিলিয়ে লক্ষাধিক গ্রাহক আছে। যাদের বিদ্যুতের চাহিদা ৩৫-৪০ মেঘাওয়াট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুত বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত সরবরাহ না  থাকায় এলাকাভিত্তিক লোডসেডিং করা হচ্ছে। তবে ওজোপাডিকো ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক হোসেন বিদ্যুতের লোডসেডিং নেই দাবী করে বলেন, বিভিন্ন এলাকায় রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য হয়তো বিদ্যুত সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়।


এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে বরিশালের বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল দুপুর রাত মিলিয়ে দিনে অন্তত ৩ থেকে ৪ বার কোথাও আবার তারও বেশি বিদ্যুত থাকে না। তারা জানান, দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ২/৩ বার ছাড়াও নামাজ ও সেহরীর সময়ও বিদ্যুতের লোডসেডিং হয়। এতে অতিষ্ঠ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন।


নগরীর কাউনিয়ার বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, রোজা শুরুর পর হঠাৎ করেই বিদ্যুতের সমস্যা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার বিদ্যুত থাকছে না। এছাড়া একবার বিদ্যুত গেলে এক থেকে দেড় ঘন্টায়ও আসে না। বিশেষ করে তীব্র গরম ও সন্ধ্যার একাধিকবার লোডসেডিংয়ের বিরম্বনায় পড়তে হয়।


বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবী, গরমের জন্য বাড়িতে বাড়িতে শীতাতপ যন্ত্র (এসি) চলছে। সন্ধ্যায় পর তারাবিরসহ নামাজের জন্য মসজিদগুলোতেও চালানো হচ্ছে এসি। এছাড়া সন্ধ্যার পর হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চার্জে বসানো হয়। এসব কারণে বর্তমানে বিদ্যুতের ঘাটতি কিছুটা বেড়েছে।


এদিকে গত এক সপ্তাহ যাবত বরিশালের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বরিশাল আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যমতে, ৩০ তারিখ শনিবার বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগে ২৯ এপ্রিল ৩৬.২, ২৮ এপ্রিল ৩৬ ডিগ্রি, ২৭ এপ্রিল ৩৫.৫, ২৬ এপ্রিল ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মোঃ মাসুম রানা রুবেল জানান, সাধারণত এ সময়টাতে বরিশালে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। তাই তাপমাত্রা একটু বেশি। তিনি জানান, আগামী তিন দিন বরিশালে কোন কোন অঞ্চলে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় উত্তর দক্ষিণ দিক দিয়ে ১০ থেকে ১৫ কিঃ মিঃ গতিতে এবং দক্ষিণ পশ্চিম দিক থেকে ৫০-৬০ কিঃ মিঃ গতিতে অস্থায়ী দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া ঈদের সময় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।