কয়েকদিনে বৃষ্টি ও পাহাড়ি পানিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে মেঘনা-তিতাস নদীতে পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে হাওর এলাকাসহ উচালিয়াপাড়ার ফসলি জমিসহ এলাকার পুকুরের মাছ।
এতে পুকুরের মাছ ও রোপণ করা বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লোকসানে পড়েছেন পুকুরের মালিক ও কৃষকরা। ফসল পরিপক্ব না হওয়ায় পানির নিচেই পচে নষ্ট হচ্ছে। এখন পানিতে তলিয়ে গেছে পুকুরের মাছ।অপরদিকে নদীতে অস্বাভাবিকহারে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী মানুষজন।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিচু এলাকায় ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ধানের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পানিবেড়ে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলা উচালিয়াপাড়াসহ ভিবিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা।সদর ইউনিয়নের উচালিয়াপাড়া গ্রামের কৃষকরা জানান, হঠাৎ সিলেটের বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় উজানের পানিতে সরাইলের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নিচু এলাকার বাড়ি ঘরসহ সকল ফসল তলিয়ে গেছে। আবার অপরিপক্ব ফসল কেটে কোনো লাভ নেই বরং কাটতে গেলে শ্রমিক খরচ হয়। তাই পানিতে পচে নষ্ট হচ্ছে ধান বিভিন্ন ফসল। অনেক পুকুরের মাছ চলে গেছে পানির সাথে। বিভিন্ন এলাকায় মানুষ রয়েছে পানিবন্দি।
সরাইল এলাকার মোবারক জানান, প্রায় ২০ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ পানি সব তলিয়ে গেছে। এছাড়া অনেক কৃষকের জমির ফসল পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
সদর ইউনিয়ন উচালিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মো. হোসেন মিয়া বলেন, সিলেটের পানি বৃদ্ধি পেয়ে পাহাড়ি পানি এলাকায় প্রবেশ করে। গ্রামটিতে ব্যাপক পরিমাণ ধানের আবাদ হয়। ফলে হাজারো একর ধানের ক্ষেতে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যায়। অনেক ধান এখনো পানির নিচে রয়েছে। আমাদের এ গ্রামের হাজার হাজার জমির ফসলি তলিয়ে গেছে। কৃষকের স্বপ্ন পানি নিচে রয়েছে।
পুকুরের মাছ নিয়ে মো. ইনছান আলি বলেন, আমার দশটি পুকুরের মাছ চলে গেছে, হঠাৎ করে উজানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পুকুরের সব মাছ বের হয়েছে গেছে আমাদের সবই শেষ। এমনকরে সরাইলে অনেক পুকুরের মালিক বলেছেন। সরাইল মৎস্য অফিস সুত্রে জানান, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে প্রায় ৩৭টি পুকুর তলিয়ে গেছে ৩ কোটি টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে।সরাইল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. মায়মুনা জাহান বলেন, উপজেলা ৯ টি ইউনিয়নে আমরা কাজ করতেছি। ক্ষতিগ্রস্থদের নাম লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে।
সরাইল কৃষি অফিস জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলা, সরাইল সদর, কালিকচ্ছ, শাহবাজপুর, নোয়াগাঁ, পানিশ্বর, চুন্টা, শাহজাদাপুরসহ ৭টি ইউনিয়নের আউশের প্রায় ৮ শতাধিক হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। সরাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. একরাম বলেন, মেঘনা ও তিতাস নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে কয়েক দিন ধরে। এতে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ফসলের জমিতে পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলার ৮ শতাধিক হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে, কৃষকের ক্ষতি পরিমাণ প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
তিনি বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের নাম লিপিবদ্ধ করা কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে প্রণোদনা দেওয়া হবে।সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো. আরিফুল হক মৃদুল,সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। ক্ষতি গ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তার কথা জানান ইউএনও।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।