গত দু'মাস ধরে ভারত-চীন সীমান্তের পরিস্থিতি উত্তেজনার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে। ১৫ জুন ভারতের ২০ জন সৈন্য নিহত হওয়ার ঘটনায় সে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ক্রমশ যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে ধাবমান হচ্ছে প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর দেশ দুটি। এদিকে চিরশত্রু পাকিস্তানের সাথে সারাবছর সীমান্ত সংঘাত লেগেই থাকে। হামলা-পাল্টা হামলা যেন নিত্য ব্যাপার। এর সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে আরেক প্রতিবেশী নেপাল।
ভারত সীমান্তে সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে নেপাল। তৈরি হচ্ছে ক্যাম্প, হেলিপ্যাড। এ যেন চতুর্মুখী বিপদে ভারত। সম্প্রতি ভারতের কিছু অংশ যুক্ত করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে নেপাল। এটা আবার সংসদে অনুমোদনও হয়েছে। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্য উত্তেজনা বেড়েছে। সংঘাতে এক ভারতীয় নাগরিকও মারা গেছে।এখন থেকে নেপালের সরকারি মানচিত্রে ভারতের তিনটি এলাকা দেখা যাবে। কালাপানি ছাড়াও রয়েছে লিপুলেখ, লিম্পিয়াধুরা এলাকা। এই মানচিত্র প্রকাশ করার পরই সামরিক তৎপরতাও শুরু হয়েছে ইন্দো-নেপাল সীমান্তে।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সীমান্ত বরাবর সেনা বাড়াচ্ছে নেপাল। শুধু তাই নয়, তৈরি করা হচ্ছে ক্যাম্পও। এছাড়া যুদ্ধকালীন তৎপরতায় হেলিপ্যাড বানানোর কাজও করছে নেপাল। সেনা তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার বেশ কিছু ছবি হাতে পেয়েছে দেশটির এক সংবাদমাধ্যম।জঙ্গলের মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ক্যাম্প বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পে ১২ থেকে ১৩ জন করে নেপাল আর্মি জওয়ান রয়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতি আগে তারা দেখেননি। কোনোদিনই নেপাল আর্মিকে অন্তত এই সমস্ত জায়গায় দেখা যায়নি।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো আরো দাবি করেছে, সীমান্তে ব্যাপকভাবে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে নেপাল। সেনা ক্যাম্প, রাস্তাসহ একগুচ্ছ নির্মাণকাজ শুরু করেছে। নেপাল-চীন সীমান্তেও চলছে নির্মাণকাজ।কালাপানি থেকে মাত্র ৪০ কিমি দূরে একটি পোস্ট বানিয়েছে নেপাল আর্মি। সেখানেও চলছে সে দেশের তৎপরতা। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, হেলিকপ্টারে করে সেনা-যন্ত্রপাতি নামানো হচ্ছে।
এদিকে, গালওয়ান সীমান্তে এখনো উত্তেজনা রয়েছে। ঘাঁটি গেড়ে বসেছে চীনের সেনাবাহিনী। শুধু ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকা নয়, একের পর উস্কানি চীনা বাহিনীর। যদিও চীনকে জবাব দেওয়ার জন্যে ফুঁসছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। লে-লাদাখের আকাশে এরই মধ্যে উড়তে শুরু করেছে যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টারও। একদিকে যখন গালওয়াল নিয়ে ক্রমশ উত্তেজনার পারদ চড়ছে অন্যদিকে ডোকলাম সীমান্তেও মাথা চাড়া দিচ্ছে চীনা লাল ফৌজ।প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, গালওয়ান নিয়ে অশান্তির মধ্যেই ডোকলামে আসে চীনা সেনাবাহিনী।
কার্যত বলা যায় ডোকালমের রেকি করে গেছে চীনা সেনারা।সূত্রে জানা যাচ্ছে, ভুটান সেনার আউটপোস্টে বেশ কিছুক্ষণ তারা সময় কাটান। এরপর ডোকলাম পর্যন্ত এগিয়ে আসে। তারপর সেখানকার ভূ-কৌশলগত বেশ কয়েকটি ছবিও চীনা বাহিনী তোলে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।