প্রবাসী অসহায় বাংলাদেশী পরিবার ও শ্রমিকদের ঈদ উপহার বিতরন করলেন “৯৬৯৮ ইউএই চ্যাপ্টার”
মুসলিম উম্মার সবচাইতে খুশির দিন পবিত্র ঈদ উল ফিতর। আর মাত্র কয়েকটি দিন পরেই পবিত্র ঈদ উল ফিতর। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে ৯৬৯৮ ইউএই চ্যাপ্টারের উদ্যোগে প্রবাসী অসহায় বাংলাদেশী পরিবার ও শ্রমিকদের ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে।
(১৮ মে) থেকে তিনদিনব্যাপী এই কার্যক্রম চলে । “৯৬৯৮ ইউ,এ,ই চ্যাপ্টার” একটি নাম, একটি পরিবার, একটি অরাজনৈতিক সংগঠন । বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড থেকে ১৯৯৬ সালে এস,এস,সি এবং ১৯৯৮ সালে এইচ,এস,সি পাস করেছে যারা, তাদের নিয়েই গঠিত ৯৬৯৮ গ্লোবাল এর একটি অংশ হলো এই “৯৬৯৮ ইউ,এ,ই চ্যাপ্টার”। আমিরাতে এই অব্দি গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৫২ জন গত ২ বছরে। ২০২০ সালে ৩য় বছরের শুরুটা জমকালো ভাবে করার কথা থাকলেও,সাম্প্রতিক করোনা মহামারীর কারণে তা স্থগিত হয়। সংগঠনটি এ পর্যন্ত বাংলাদেশে বিভিন্ন আর্তমানবতার কাজে এগিয়ে এসেছে।বর্তমান মহামারির সমস্যার কারণে অনেক প্রবাসীরা হয়ে পড়ে বেকার, কাজ থাকলেও হয়ত পাচ্ছেন না বেতন। অনেক ব্যবসায়ী সম্মুখীন হচ্ছে মোটা অংকের লোকসানের। সবচাইতে সমস্যায় পড়ে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর পরিবারগুলো। ৯৬৯৮ ইউ,এ,ই চ্যাপ্টারের সদস্যবৃন্দের ইচ্ছাপোষণে পরিকল্পনা নেয়া হয়, আসন্ন ঈদে এমন কিছু পরিবার ও শ্রমিকভাইদের জন্য উপহার দেয়ার, যারা খুবই করুণভাবে দিন যাপন করছেন এই প্রবাসে। সেই সাথে রয়েছে ৯৬৯৮ পরিবারের যারা বাংলাদেশে খুবই নাজুক অবস্থায় দিনযাপন করছেন। যেই ভাবা, সেই কাজ। এবার পালা বাজেটের। বিশাল অংকের একটি ফিগার আসলো, এবং সবাই তাতে অভূতপূর্ব ভাবে সাড়াও দিয়ে দিল। এর মধ্যে যুক্ত হয়ে গেল ROYEX TECHNOLOGIES নামের একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান, যার কারণে পরিকল্পনার বাজেট বেড়ে দ্বিগুনে দাঁড়িয়ে গেল। অত্যন্ত ফলপ্রসূভাবে প্রজেক্ট সম্পাদন শুরু হলো।
যেহেতু এটি বন্ধুদের নিয়ে গঠিত একটি সংগঠন, এখানে নেই কোন সিনিয়র-জুনিয়র বা কোন পদ-বিভাজন। ইউ,এ,ই এর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ৯৬৯৮ এর সদস্যরা তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে উপহার বিতরণ কাজে অংশ নিয়েছেন। ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরন কার্যক্রমের কো-স্পন্সরিং কোম্পানী ROYEX TECHNOLOGIES এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব রাজিব রায়। তিনি নিজেও একজন সদস্য এই গ্রুপের। তিনি বলেন “আমাদের অবশ্যই সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। সেই বোধ থেকেই আমরা এগিয়ে এসেছি ৯৬৯৮ ইউ,এ,ই চ্যাপ্টারের সাথে যুক্ত হয়ে এমন মহতি একটি কাজে অংশ নিতে। ভবিষ্যতেও আমাদের প্রতিষ্ঠান এধরনের কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে”। ইউ,এ,ই ৯৬৯৮ চ্যাপ্টারের অন্যতম সদস্য আফতাব মনির বলেন “যেসব খাদ্য সামগ্রী আমরা বিতরণ করছি, আমরা কোনভাবেই এগুলোকে ত্রান বলে অন্যদের ছোট করতে চাইনা, এটি আমরা উপহার হিসেবে দিচ্ছি এবং তারাও স্বাচ্ছন্দ্যে তা গ্রহন করছে। এছাড়া বাংলাদেশে বসবাস করে এবং সমস্যাগ্রস্ত, এরকম ১০টি পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ১০০০০/- টাকা (প্রতি পরিবারে ), যা গ্রহীতার ছবি প্রকাশ না করেই দেয়া হচ্ছে, একমাত্র পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরে যেন বন্ধুগুলোর পরিবার একটু ভাল থাকতে পারে। গ্রুপের অন্যতম সদস্য কামাল হোসেন ভুঁইয়া রতন বলেন, “প্রতিটি বাক্সে রয়েছে ২০ কেজির খাদ্য সামগ্রী যা নিত্য প্রয়োজনীয়, সাথে রয়েছে ঈদের লাচ্ছা সেমাই, চিনি, দুধ, কিসমিস ইত্যাদি।জনসচেতনতার জন্য আমরা ২টি করে মাস্ক প্রতি বাক্সে রেখেছি। ভবিষ্যতে আমাদের কার্যক্রমের বিস্তৃতি দেখে অন্যান্য সংগঠনগুলোও এগিয়ে আসুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের ঈদ আনন্দ আমরা খুঁজে পেতে চাই প্রবাসী ভাই-বোনদের মাঝে, খুঁজে পেতে চাই দেশে থাকা আমাদের অভাবগ্রস্ত বন্ধুদের মাঝে”।
গ্রুপের সদস্য মোহাম্মদ দিদার হোসেইন বলেন, “এখানেই আমাদের শেষ নয়, আল্লাহ পাক যদি আমাদের সুস্থ রাখেন, আগামীতে গ্রুপের তরফ থেকে এই ধরনের কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে”। যাদের জন্য এইসব উপহারসামগ্রী, তাদের নেয়া হবেনা কোন ছবি, করা হবেনা কোন ফিচার। এসময় আরো উপস্হিত ছিলেন অন্যতম সদস্য শামীম আসাদুজ্জামান। সেই সাথে একাগ্রতা প্রকাশ করেছেন ৯৬৯৮ ইউ,এ,ই চ্যাপ্টারের অন্যান্য সদস্য অংশুমান, শাহির, জেসি, রজত, জামান, এমরান, মিঠু, শাহীন, রাশেদ, মনির, সোহেল, নিজাম, মোমিন প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।