‘ইসরাইলের তেলআবিবসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩৫টি জায়গা আমাদের আওতায় আছে’ ইরানের এমন ঘোষণার পর এবার ইরানের ৫২টি জায়গা চিহ্নিত করে রাখার ঘোষণা দিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি ইরান ও তার সংস্কৃতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেসব লক্ষ্যবস্তুতে শিগগিরই খুব কঠোর আঘাত করা হবে। আমেরিকা আর কোনও হুমকি সহ্য করবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর আগে ইরানের সেনাবাহিনী ইসলামি বিপ্লবী গার্ডস এর কমান্ডার জেনারেল গুলামআলী আবু হামজাহ বলেছিলেন, ইসরাইলের তেলআবিবসহ ৩৫টি লক্ষ্যবস্তু আমাদের আওতায়। কাজেই কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ নিতে যেখানে আমেরিকানরা আমাদের আওতায় থাকবে, সেখানেই তাদের শাস্তি দেয়া হবে।
কাসেম সোলাইমানির হত্যার ‘বদলা’ কী ভাবে নিতে পারে ইরান, তা নিয়ে কার্যত অন্ধকারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তেহরানের তেমন কোনও পরিকল্পনা থাকলে তার ফল যে ভাল হবে না, তা জানিয়ে আগেভাগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল হোয়াইট হাউস।
ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে জানিয়ে দিলেন, ‘কোনও মার্কিন নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের উপর হামলা হলে, আমেরিকা ইরানের আরও ৫২টি জায়গায় আক্রমণ করার জন্য চিহ্নিত করে রেখেছে। ‘খুব দ্রুত এবং খুব বড়’ আঘাত হানা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। স্বাভাবিক ভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই হুমকির জেরে ফের উত্তেজনা বেড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বাগদাদ বিমাবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি। তারপর থেকেই কার্যত ফুঁসছে ইরান। যে কোনও সময় প্রত্যাঘাত আসতে পারে বলে মনে করছে আমেরিকাও। আর সেই পাল্টা আঘাত হতে পারে ইরাকে মার্কিন সেনা বা ইরান-মার্কিন যৌথ বাহিনীর উপর। কিন্তু কোথায় হামলা হতে পারে, তার কোনও নির্দিষ্ট তথ্য আপাতত হোয়াইট হাউসের হাতে নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যেই অন্তত দুই জায়গায় হামলার খবরও মিলেছে। শনিবার বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের কাছে দুই রাউন্ড মর্টার বিস্ফোরণ ঘটেছে। প্রায় একই সময়ে ইরাকে আল-বালাদ সামরিক ঘাঁটিতেও দুটি রকেট ছোড়া হয়েছে বলে খবর। এই ঘাঁটিতে ইরাকি ও মার্কিন যৌথ সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। তবে দুই হামলার কোনওটিতেই কেউ হতাহত হননি। যে কোনও সময় ইরান আরও বড় হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে হোয়াইট হাউস।
গত মাসে ইরাকের মার্কিন দূতাবাসে হামলার বেশ কয়েক বছর আগে ইরানে মার্কিন দূতাবাসে ৫২ জনকে পণবন্দি করার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ৫২ জনের বদলে ৫২টি জায়গায় হামলার কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছে, সংখ্যাটা তাৎপর্যপূর্ণ নয়। আসলে ইরান বদলা নেওয়ার কথা ভাবলে আমেরিকা যে আরও হামলা চালাতে পারে, সেই হুঁশিয়ারি দিয়ে কার্যত ইরানকে দমিয়ে রাখতে চাইছে ওয়াশিংটন।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।