রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুর্তজা কুরেইরিসের মুক্তির দাবিতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে গোটা বিশ্ব। ২০১১ সালে মাত্র ১০ বছর বয়সে আরব বসন্তের এক সাইকেল র্যালির নেতৃত্ব দেয় মুর্তজা। এ অপরাধে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়। বিচার শেষে ১৮-তে পা রাখা মুর্তজার ফাঁসির আদেশ দেয় দেশটি। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে বিশ্বজুড়ে। মুর্তজাকে মুক্তি দিতে সৌদির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। খবর আলজাজিরার। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সৌদি কারাগারে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে রাখা হয়েছে মুর্তজা কুরেইরিসকে। তার ফাঁসি কার্যকর হলে সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে। আর তা হবে বিশ্বের শিশুদের আইনি সুরক্ষার সবচেয়ে ভয়াবহ লঙ্ঘনের ঘটনা।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সৌদি পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। রিয়াদকে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত থেকে বের করে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছে তারা। আরবের দুর্নীতিপ্রবণ ও জনবিরোধী শাসকদের বিরুদ্ধে যখন বসন্তের ঢেউ উঠেছিল, সে সময় সৌদি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল ১০ বছর বয়সী শিশু মুর্তজা কুরেইরিস। বন্ধুদের সঙ্গে সাইকেল নিয়ে অহিংস প্রতিবাদে নেমেছিল সে। ৩০ বন্ধুর দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছিল মুর্তজা। ওই র্যালি শেষে সে চিৎকার করে বলে, সৌদিতে সবাই মানবাধিকার পরিস্থিতি সমুন্নত দেখতে চায়। মুর্তজা কুরেইরিসের দুঃসাহস সৌদি কর্তৃপক্ষের নজর এড়ায়নি। এ ঘটনার তিন বছর পর মুর্তজা কুরেইরিসকে বাহরাইন সীমান্তে গ্রেফতার করে সৌদি আরব। ওই দিন পরিবারের সঙ্গে সৌদি ছেড়ে প্রতিবেশী বাহরাইনে পালিয়ে যাচ্ছিল মুর্তজা। মুর্তজাকে সৌদির দাম্মাম শহরের পূর্বে অবস্থিত একটি কিশোর কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আটকের পর চার বছরের মধ্যে তার সঙ্গে কোনো আইনজীবীর দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
সিএনএনের এক বিশেষ অনুসন্ধানে জানা যায়, আটকের পর মুর্তজার ওপর চরম নির্যাতন চালানো হয়েছে। মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। সব শেষে শান্তিপূর্ণ সরকার বিরোধিতার শাস্তি হিসেবে ওই শিশুর মৃত্যুদে র সাজা ঘোষিত হয়েছে। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ফ্রিডম অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৩ বছর বয়সে আটক হওয়া শিশুকে মৃত্যুদণ্ড দেবেন না। রিপ্রাইভ নামের মানবাধিকার সংগঠনের পরিচালক মায়া ফোয়া বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে শিশুদের ফাঁসিতে ঝোলানোর থেকে বড় অপরাধ তেমন একটা নেই।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।