প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১০
পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে পেনশনের লাইনে দাঁড়ানো বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে রাশিয়ার বিমান হামলা চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে এই হামলা সংঘটিত হয়। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রবীণ নাগরিক। আহত হয়েছেন আরও ১৯ জন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, নিহতরা সবাই সাধারণ মানুষ এবং তারা ইয়ারোভা গ্রামে পেনশন নিতে জড়ো হয়েছিলেন। আঞ্চলিক প্রশাসক ভাদিম ফিলাশকিন ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চলছে এবং বাসিন্দাদের নিরাপদ অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইয়ারোভা গ্রামটি স্লোভিয়ানস্ক শহরের উত্তরে ফ্রন্টলাইনের মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রুশ বাহিনী পূর্বাঞ্চলে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়ায় এই অঞ্চল বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। হামলার সময় উপস্থিত ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জেলেনস্কি এই হামলাকে “বর্ণনা করার মতো কোনো শব্দ নেই” বলে উল্লেখ করেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত হলে এটি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনীয় বেসামরিকদের ওপর সংঘটিত অন্যতম ভয়াবহ হামলা হবে। রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরু হওয়ার ৪২ মাস পরও এ ধরনের হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত আগস্টের শেষ দিকে কিয়েভে রাতের আঁধারে চালানো বিমান হামলায় ২৩ জন নিহত হয়েছিল। এছাড়াও, রাশিয়ার ইউক্রেনীয় রাজধানী কিয়েভে সাম্প্রতিক আকাশ হামলায় সরকারি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইয়ারোভায় হামলার পাশাপাশি দোনেৎস্ক অঞ্চলের আরও কয়েকটি এলাকায় গোলাবর্ষণে তিনজন নিহত হয়েছেন। জেলেনস্কি বিশ্বকে নীরব না থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর কাছে প্রতিক্রিয়া জানানোর অনুরোধ করেছেন। রুশ সেনাদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি।
হামলার মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ তীব্র আতঙ্কের মধ্যে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা আহতদের চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও জরুরি সেবা সংস্থা ডিএসএনএস নিরাপত্তা বজায় রাখতে কাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার আগে তারা কোনও সতর্কবার্তা পাননি। এই হামলার ফলে স্থানীয় জনজীবন সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রন্টলাইনের নিকটে অবস্থিত এলাকায় বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্য করে এই ধরনের হামলা যুদ্ধবিরতির প্রতি চরম হুমকি তৈরি করে।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দা জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বমঞ্চে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো ও ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ইয়ারোভায় বিমান হামলার ঘটনায় নিহত ও আহতদের সংখ্যা এখনও বাড়তে পারে, এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ থাকায় আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।