প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১১:১২
টানা ১২ দিনের ইরান-ইসরাইল সংঘাত শেষে মধ্যপ্রাচ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়লেও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব যেন নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করছে। ১৩ জুন শুরু হয়ে ২৪ জুন পর্যন্ত চলা এ সংঘাতে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে ইসরাইল। দেশটির ট্যাক্স কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৭০০টির বেশি ক্ষতিপূরণ আবেদন জমা পড়েছে।
ইসরাইলের জনপ্রিয় পত্রিকা ইয়েদিওথ আহরনোথ জানিয়েছে, ভবন, যানবাহন এবং যন্ত্রপাতিসহ ক্ষতিগ্রস্ত সম্পদের পরিমাণ ব্যাপক। এই দাবির মধ্যে শুধু ভবন ক্ষতির আবেদনই ৩০ হাজারের বেশি, যেখানে যানবাহনের জন্য আবেদন প্রায় সাড়ে তিন হাজার এবং অন্যান্য সামগ্রী ও যন্ত্রপাতির জন্য প্রায় চার হাজারের মতো।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুর বরাতে জানা যায়, এই হিসাব এখনও চূড়ান্ত নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এখনো আবেদন জমা দেননি। ফলে আগামী দিনগুলোতে আবেদন সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে তেলআবিব রয়েছে শীর্ষে। শুধু এ অঞ্চল থেকেই এসেছে ২৪ হাজার ৯০০টির বেশি আবেদন। আশকেলোন শহর থেকে জমা পড়েছে ১০ হাজারের বেশি দাবি। এসব এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্রতা তুলনামূলক বেশি ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংঘাত চলাকালে ইসরাইল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে একাধিক হামলা চালায়। তারা অভিযোগ করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তবে তেহরান এই দাবি কঠোরভাবে অস্বীকার করেছে এবং নিজেদের আত্মরক্ষার অংশ হিসেবেই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
ইরান ইসরাইলের হামলার জবাবে পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে। এতে করে সংঘাতের পরিধি আন্তর্জাতিক রূপ নিতে শুরু করে।
তীব্র এই উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার রাতে একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তার মধ্যস্থতায় অবশেষে দুই দেশ সংঘর্ষ থেকে সরে আসে এবং একরকম শান্তিপূর্ণ অবস্থানে ফিরে আসে।
যদিও সংঘাতের অবসান ঘটেছে, কিন্তু আর্থিক ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট নয়। ইসরাইল সরকার এখনো ক্ষতিপূরণ বিতরণের সুনির্দিষ্ট আর্থিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেনি। তবে এত বিপুল আবেদন প্রক্রিয়াকরণে সরকারকে বড়সড় বাজেট বরাদ্দ করতে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।