প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:১১
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হলো কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের সরাসরি হামলার পর। এই ঘটনার জেরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন—এমনটাই দাবি করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরানি টেলিভিশনে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির অনুরোধকে ‘মিনতি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় ইরানি পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা ছিল ‘সফল’ এবং ‘প্রতিশোধমূলক’। যদিও কাতারের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, সব ক্ষেপণাস্ত্রই প্রতিহত করা হয়েছে এবং ঘাঁটিতে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) এই হামলার জন্য প্রশংসা করে আইআরআইএনএন জানায়, এটি ইরানি জাতির প্রতিরোধের প্রতীক এবং জাতীয় সম্মানের বহিঃপ্রকাশ। হামলার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, ইরান প্রয়োজন হলে সরাসরি মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানতে পারে।
এদিকে এই প্রতিশোধের সূত্রপাত হয় ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল হঠাৎ করে ইরানে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের ওই অভিযানে ইরানের সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও বসতবাড়িতে হামলা হয়। নিহত হন আইআরজিসি’র শীর্ষ কমান্ডারসহ বেশ কয়েকজন জেনারেল, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক—মোট সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে।
ইসরায়েলের সেই হামলার পর ইরানও শুরু করে পাল্টা অভিযান—‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’। এতে ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে একাধিক স্থাপনায় আঘাত হানে। হতাহতের সংখ্যা কম হলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক, বিশেষ করে সামরিক অবকাঠামোর ক্ষেত্রে।
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার মাঝেও ময়দানে থেমে নেই প্রতিশোধের বারুদের গন্ধ। ট্রাম্পের ঘোষণাকে কেউ কেউ ইতিবাচক মনে করলেও তেহরানের ক্ষোভ এখনও প্রশমিত হয়নি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্বজুড়ে এই সংঘাত নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ, বিশেষ করে যখন আঞ্চলিক উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। এখন দেখার বিষয়, মিনতির বার্তা কি সত্যিই যুদ্ধের আগুন নিভাতে পারে, নাকি তা শুধুই একটি কূটনৈতিক কৌশল।