প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১৮:৩৮
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের উত্তাপে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে শত্রুতা এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইরানের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’-এর অংশ হিসেবে ইসরাইলের ওপর এটি ছিল ২০তম হামলা, যা দেশটির সামরিক প্রতিশোধের ধারাবাহিকতা আরও জোরালো করে তুলেছে। সর্বশেষ এই হামলায় ইরান প্রথমবারের মতো ‘খাইবার শেকান’ নামের অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করেছে ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)।
খাইবার ক্ষেপণাস্ত্রের এই ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ইরান ইসরাইলকে এক ধরনের কৌশলগত বার্তা দিয়েছে। বিপ্লবী গার্ডের জনসংযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই হামলায় ক্ষেপণাস্ত্রটি সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে এবং তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলের সফল বাস্তবায়ন প্রমাণ করে। হামলার আগে ইরান সতর্ক করে দিয়েছিল, অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইলের কোনো স্থানই নিরাপদ থাকবে না। এই হামলা সেই হুঁশিয়ারিরই বাস্তব রূপ।
এই হামলা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের কথিত হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেই চালানো হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ফোর্দো, নাতানজ ও এসফাহানে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানার দাবি করে, যার পরপরই ইরান ইসরাইলের অভ্যন্তরে এই পাল্টা হামলা চালায়।
তেল আবিব ও আশপাশের সুনির্দিষ্ট স্থানে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয় বলে জানানো হয়েছে। খাইবার শেকান ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা দীর্ঘ এবং এটি উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন হওয়ায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে আরও একটি বড় সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না এলেও দেশটির সামরিক বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।
ইরান-ইসরাইল দ্বন্দ্ব নতুন করে যে রূপ নিয়েছে, তা শুধু দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর ছায়া ইতোমধ্যে লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান ও ইরাক পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে, যা গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, খাইবার ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার শুধু একটি সামরিক আঘাত নয়, বরং এটি ইরানের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও প্রতিরোধ শক্তির এক সরাসরি ঘোষণা, যা আগামী দিনগুলোর ভূরাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলবে।