প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১১:৪
মধ্যপ্রাচ্যে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ইরানে ইসরায়েলি হামলার জেরে। এই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মিসরের নেতৃত্বে ২১টি মুসলিম দেশ একত্র হয়ে একটি শক্ত অবস্থান নিয়েছে, যেখানে তারা শুধু ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের নিন্দা জানায়নি, বরং পুরো অঞ্চলের জন্য একটি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ পরিকল্পনারও দাবি তুলেছে। আলজাজিরা জানায়, এই দেশগুলো স্পষ্টভাবে ‘মধ্যপ্রাচ্যের সবাই’ শব্দটি ব্যবহার করে ইসরায়েলের পারমাণবিক কর্মসূচির দিকেই ইঙ্গিত করেছে। অর্থাৎ তারা শুধু ইরানের দিকে নয়, বরং ইসরায়েলকেও পারমাণবিক অস্ত্রের দৌড় থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
এই গ্রুপটি তাদের বিবৃতিতে আরও সতর্ক করেছে, এই ধরনের হামলা ও প্রতিহিংসার চক্র পুরো অঞ্চলকে সহিংসতা ও অস্থিরতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। তাই তারা এখনই একটি দায়িত্বশীল ও যৌক্তিক সমাধানের পক্ষে ঐক্যমত গঠনের কথা বলেছে। তাদের মতে, কেবল কূটনৈতিক ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব।
তারা আরও বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যকে একটি পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (এনপিটি)-তে অঞ্চলটির সব দেশকে যুক্ত হতে হবে। এটি কেবল শান্তির বার্তা নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তার দিকেও এক বাস্তবমুখী অঙ্গীকার।
এই গ্রুপে স্বাক্ষর করেছে আলজেরিয়া, বাহরাইন, ব্রুনাই, চাদ, কোমোরোস, জিবুতি, মিসর, গাম্বিয়া, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই তালিকা প্রমাণ করে মুসলিম বিশ্ব একজোট হয়ে যুদ্ধ নয়, শান্তির ভাষা চায়।
১২ জুন রাতে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালায়। লক্ষ্য ছিল সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু গবেষণাকেন্দ্র ও বাসিন্দাদের এলাকা, যা ইরানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সৃষ্টি করে।
এই হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে এবং পাল্টাপাল্টি হুমকি চলছে। এখনো পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কিংবা বড় শক্তি কোনো উদ্যোগ নেয়নি এই সংঘাত নিরসনে।
এই প্রেক্ষাপটে ২১ মুসলিম দেশের এই আহ্বান শুধু প্রতিবাদ নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যতের জন্য এক আশাবাদী বার্তা। বিশ্ব যদি এই ডাকে সাড়া দেয়, তবে সহিংসতা নয়, শান্তিই হতে পারে এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ।