পারমাণবিক যুদ্ধের মুখোমুখি বিশ্ব, উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় ইরানের সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র এবং আবাসিক এলাকাগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেহরানের দাবি অনুযায়ী, এই আক্রমণে অন্তত ২২৪ জন ইরানি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে আছেন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু বিজ্ঞানীরা। এই ক্ষয়ক্ষতির পর ইরান আর দেরি করেনি—গতকাল সকালেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে জবাব দিয়েছে তারা। তেলআবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে হামলার সাইরেন বেজে উঠেছে, বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

এই সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়ে যখন ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য জেনারেল মোহসেন এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ইসরায়েল যদি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তাহলে পাকিস্তানও পারমাণবিক জবাব দেবে। তার ভাষ্যমতে, “পাকিস্তান আমাদের নিশ্চিত করেছে যে তারা আমাদের পাশে থাকবে।” তিনি আরও জানান, কাতারও ইরানের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মন্তব্যগুলো কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং পরোক্ষ হুমকি, যা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি করেছে। পাকিস্তান একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ—তাদের এমন অবস্থান শুধু ইসরায়েল নয়, সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বকেই ভাবিয়ে তুলেছে। যদি সত্যি করে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়, তাহলে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধের জন্ম দিতে পারে।

ইতোমধ্যে জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকেও এসেছে কঠোর বার্তা—“জাতীয় নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রয়োজনে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

মুসলিম বিশ্বকেও এ ঘটনায় নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হচ্ছে। ইরান ও পাকিস্তান এরই মধ্যে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্বজুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন—এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি কি শেষ পর্যন্ত পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাবে? না কি বিশ্ব নেতারা এবার অন্তত হুঁশিয়ার হবেন?