প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫, ২৩:৫৫
ইসরায়েলি গণমাধ্যম চ্যানেল ফোরটিনের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চলমান ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে চীন ও রাশিয়া তেহরানকে ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক বিমানের চালান পরিবহনে সহায়তা করছে। এই অভিযোগের পটভূমিতে মধ্যপ্রাচ্যের জটিল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ৬ জুন যুক্তরাষ্ট্র দশজন ব্যক্তি এবং সাতটি প্রতিষ্ঠানের ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এসব ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে ইরানের সঙ্গে অবৈধ ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওয়াশিংটনের প্রকাশিত বিবরণ অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে হংকং-ভিত্তিক হিরো কম্পেনিয়ন লিমিটেড, প্লজকম লিমিটেড এবং কিনলার ট্রেডিং লিমিটেড। এই সংস্থাগুলো ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান ইরানে সরবরাহ করছে বলে দাবি করা হয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরান চীন থেকে হাজার হাজার টন ব্যালিস্টিক মিসাইলের উপাদান অর্ডার করেছে। এই চুক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানায়, এসব উপাদান আসন্ন সামরিক অভিযানের জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যকার পারমাণবিক আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ইঙ্গিত করে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল আরও উল্লেখ করে, ইরান বিকল্প প্রস্তুতি হিসেবে নিজস্ব সামরিক সক্ষমতা জোরদারে মনোযোগ দিচ্ছে।
অন্যদিকে, চীন ও রাশিয়া উভয় দেশই ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার বিরোধিতা করেছে। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, ইসরায়েলের আগ্রাসন অযৌক্তিক এবং তা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে একইসঙ্গে তিনি কূটনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন। তাঁর মতে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার দরজা এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আরও স্পষ্ট করে তুলেছে যে, অঞ্চলটি ক্রমেই একটি বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এবং পরাশক্তিগুলোর ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।