প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১১:২০
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের মেয়র কারেন ব্যাস মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ডাউনটাউন এলাকায় এই কারফিউ কার্যকর করার কথা জানান। মেয়র কারেন বলেন, চলমান বিক্ষোভ এবং ভাঙচুরের কারণে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত রাতে মাত্র ২৩টি দোকান লুট হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি সবাইকে ওই এলাকা থেকে দূরে থাকার অনুরোধ জানান এবং কারফিউ ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
শহরের এই ছোট অংশে কারফিউ জারি হলেও মিডিয়াতে পুরো শহর উত্তাল বলে ভুল ধারনা তৈরি হয়েছে বলে মেয়র কারেন ব্যাস মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, শুধুমাত্র এক বর্গমাইল এলাকায় এই কারফিউ জারি হয়েছে, যা পুরো শহরের মাত্র এক অংশ। লস অ্যাঞ্জেলেসে পাঁচ দিন ধরে চলমান বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা মূলত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী নীতির প্রতিবাদ।
বিক্ষোভ শুধু লস অ্যাঞ্জেলেসেই সীমাবদ্ধ না থেকে নিউ ইয়র্ক, শিকাগো ও আটলান্টাসহ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম ট্রাম্প প্রশাসনের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তিনি ট্রাম্পের পদক্ষেপকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে এবং জনগণের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করেছে।
গভর্নর নিউজম আরও বলেন, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে এমন আচরণ সমাজের সাধারণ মানুষদের প্রতি অন্যায়। রান্নাঘরের কর্মী, দিনমজুর ও দর্জির মতো সাধারণ মানুষকেও তারা সন্দেহের চোখে দেখে তাড়া করা হচ্ছে। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির সমালোচনা করে বলেন, এই নীতি সমাজকে নিরাপদ করার পরিবর্তে বিভাজন ও ভয় ছড়াচ্ছে।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার অবস্থানে অটল রয়েছেন। তিনি সেনাবাহিনীর কাছে বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরে যেন বিশৃঙ্খলা না ছড়ায়, তা তিনি কখনোই অনুমতি দেবেন না। তিনি বীর সেনাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বিদেশে রক্ত ঝরানোর পর তাদেরই কৃতিত্ব যাতে দেশের অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা বজায় রাখে, সে দায়িত্ব তিনি পালন করবেন।
এই পরিস্থিতিতে লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি হওয়া এবং বিক্ষোভের প্রসার দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের একটি প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে। পরিস্থিতি আগামী দিনে কেমন পরিবর্তিত হয়, তা সময়ই বলবে।