প্রকাশ: ৫ জুন ২০২৫, ১১:৯
গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের অবসান চেয়ে বিশ্বজুড়ে আহ্বান উঠলেও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আনা সর্বশেষ প্রস্তাবটিও আটকে গেল যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে। বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে ১৫ সদস্যের মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রই ছিল বিরোধিতায়, বাকি সব দেশই সমর্থন দেয় প্রস্তাবটিকে।
গাজা উপত্যকায় প্রতিদিনই চলছে বোমাবর্ষণ, শিশু-নারী-নিরপরাধ মানুষের লাশে ভরে উঠছে শহরের অলিগলি। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানো মানুষগুলোও শান্তি পাচ্ছে না। খাদ্য, পানি, ওষুধ— সব কিছুতেই চলছে তীব্র সংকট। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গাজা যেন এক অদৃশ্য মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, তারা হামাস নির্মূল করতে অভিযান চালাচ্ছে এবং জিম্মিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে। তবে এই অজুহাতে নির্বিচারে চালানো বিমান হামলা ও স্থল আক্রমণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুলসহ বেসামরিক অবকাঠামো।
বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে যে প্রস্তাবটি আনা হয়, তাতে হামলা বন্ধ করে অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে গাজার দুর্বিষহ মানবিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সেখানে অবাধ মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বানও ছিল।
এছাড়া হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে আটক সব জিম্মিকে অবিলম্বে ও মর্যাদার সঙ্গে মুক্তি দেওয়ার দাবিও অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রস্তাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আগেই জানিয়ে দেয়, এমন কোনো প্রস্তাবে তারা সম্মতি দেবে না যাতে হামাসকে নিরস্ত্র করার কথা না থাকে।
ভোটের আগে মার্কিন প্রতিনিধি ডরোথি শিয়া বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে অস্বীকার করা যায় না। যুক্তরাষ্ট্র তাই এমন প্রস্তাব সমর্থন করবে না যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা চাহিদাকে উপেক্ষা করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ছে, কারণ বড় শক্তির ভূরাজনৈতিক স্বার্থ এখনো মানুষের জীবনের চেয়ে বড় হিসেবে রয়ে যাচ্ছে।