প্রকাশ: ৩ জুন ২০২৫, ২৩:৫৬
বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও সমাজসেবক বিল গেটস এবার তার দান কার্যক্রমকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছেন। আগেই নিজের ৯৯ শতাংশ সম্পদ দান করার ঘোষণা দেওয়া এই মাইক্রোসফট সহপ্রতিষ্ঠাতা এবার জানালেন, আগামী ২০ বছরের মধ্যে তার বিপুল সম্পদের বড় একটি অংশ ব্যয় হবে আফ্রিকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে।
সম্প্রতি ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে এক ভাষণে তিনি বলেন, আফ্রিকার প্রতিটি দেশের মানুষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে এ মহাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
গেটস জানান, তার দানকৃত তহবিলের অধিকাংশই ব্যয় করা হবে শিশুদের প্রাথমিক বিকাশ, মায়েদের পুষ্টি, এবং প্রতিরোধযোগ্য রোগ নিয়ন্ত্রণে। তার মতে, মায়েদের গর্ভধারণের আগেই পুষ্টি নিশ্চিত করা গেলে শিশুদের স্বাস্থ্যেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। শিশুদের প্রথম চার বছরের সঠিক পুষ্টি ভবিষ্যতের জন্য বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং যেমন আর্থিক খাতে পরিবর্তন এনেছে, তেমনি AI ব্যবহারে স্বাস্থ্যসেবায় বিপ্লব আনা সম্ভব। রুয়ান্ডার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানে ইতিমধ্যে AI-চালিত আল্ট্রাসাউন্ড প্রযুক্তি দিয়ে গর্ভাবস্থার জটিলতা আগেভাগেই শনাক্ত করা হচ্ছে।
বিল গেটস তার ব্লগে লেখেন, “আমি মারা গেলে মানুষ অনেক কিছু বলবে। তবে আমি নিশ্চিত করতে চাই, কেউ যেন বলতে না পারে—‘তিনি ধনী হয়ে মারা গিয়েছেন।”
গেটস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, তাদের তিনটি মূল লক্ষ্য হলো—মা ও শিশুর মৃত্যু প্রতিরোধ, শিশুদের স্বাস্থ্যবানভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করা এবং দারিদ্র্য থেকে লাখ লাখ মানুষকে মুক্ত করা।
এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন আফ্রিকার নেতারাও। মোজাম্বিকের সাবেক ফার্স্ট লেডি গ্রাসা ম্যাচেল বলেন, সংকটের সময় এমন প্রতিশ্রুতি আফ্রিকার জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়। তিনি একে “রূপান্তরের পথে অটল প্রতিশ্রুতি” বলে উল্লেখ করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রশাসনের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে আফ্রিকার স্বাস্থ্য সহায়তা কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গেটসের এই ঘোষণা বড় রকমের আশার বার্তা বহন করে।