প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৩
রমজানের শেষ শুক্রবার মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশেষ গুরুত্ববহ দিন, যা জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। এই দিনটি পবিত্র রমজানের শেষ জুমা হওয়ায় এর ফজিলত অত্যন্ত মহিমান্বিত। এটি মুসলমানদের মনে করিয়ে দেয় যে, রমজান শেষ হয়ে আসছে এবং এই মাসের অফুরন্ত রহমত লাভের আর বেশি সময় নেই। তাই জুমাতুল বিদার দিন ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জুমার দিনের মর্যাদা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, এটি সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন, যেদিন হজরত আদম (আ.) সৃষ্টি হন, জান্নাতে প্রবেশ করেন এবং পুনরায় পৃথিবীতে আসেন। এই দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। এছাড়াও এই দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যখন বান্দার দোয়া কবুল হয়। বিশেষ করে রমজানের শেষ শুক্রবার হওয়ায় এর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায়।
ঐতিহাসিকভাবে রমজানের শেষ শুক্রবার অনেক তাৎপর্য বহন করে। হজরত সুলায়মান (আ.) এই দিনে জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা প্রতিষ্ঠা করেন বলে জানা যায়। এজন্য সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনটিকে আল কুদস দিবস হিসেবে পালন করেন এবং ফিলিস্তিনসহ নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য বিশেষ দোয়া করেন।
রমজানের মূল শিক্ষা তাকওয়া অর্জন, যা মানুষকে গুনাহ থেকে দূরে থাকার অনুপ্রেরণা জোগায়। এক মাস সিয়াম সাধনার পরও যদি মানুষ পাপ কাজে লিপ্ত হয়, তবে রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। এই দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত, যেন আমরা রমজানের শিক্ষাকে পুরো বছর বাস্তব জীবনে ধারণ করতে পারি।
জুমাতুল বিদার দিন দেশের বিভিন্ন মসজিদে লাখো মুসল্লি একত্রিত হয়ে নামাজ আদায় করেন এবং আল্লাহর কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করেন। বলা হয়ে থাকে, এই দিনে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য গুনাহগারকে ক্ষমা করেন এবং দোয়া কবুল করেন। তাই এই দিনটি যথাযথভাবে পালন করা উচিত।
ইসলামী স্কলাররা বলেন, রমজান মাসে প্রতিদিন ইফতারের সময় ৭০ হাজার গুনাহগারকে ক্ষমা করা হয়। আর জুমাতুল বিদার দিনে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তাই এদিন বেশি করে ইবাদত, দোয়া, কুরআন তিলাওয়াত এবং দান-সদকা করা উত্তম।
রমজান বিদায় নিলেও এর শিক্ষাগুলো যেন আমাদের জীবনে স্থায়ীভাবে প্রতিফলিত হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করা দরকার। পাপ ও গুনাহ থেকে বিরত থেকে সত্য, ন্যায় ও ইনসাফের পথ অনুসরণ করাই হবে রমজানের প্রকৃত অর্জন।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে রমজানের বরকত থেকে পরিপূর্ণভাবে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দান করুন এবং আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করুন। আমিন।