গাজার যুদ্ধবিরতি টিকবে তো? ইসরায়েলের হুমকি বাড়ছে !

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ৫ই মার্চ ২০২৫ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
গাজার যুদ্ধবিরতি টিকবে তো? ইসরায়েলের হুমকি বাড়ছে !

গাজায় গত জানুয়ারি থেকে কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি সরকার গাজায় পানি ও বিদ্যুৎ বন্ধের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক মুখপাত্র। হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওমর দোস্ত্রি।  


এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হামাস যতদিন তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করবে, ততদিন ইসরায়েলের সুবিধা বাড়বে। হামাসকে চাপে রাখতে ইসরায়েলের হাতে আরও পদক্ষেপ রয়েছে এবং যেকোনো সময় গাজায় আবারও যুদ্ধ শুরু হতে পারে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে এবং ইসরায়েল যুদ্ধবন্দিদের ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।  


এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে যেতে নেতানিয়াহু অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি চান প্রথম ধাপটি আরও বাড়ানো হোক। এ কারণে সম্প্রতি ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে হামাস তাদের শর্ত মেনে নিতে নারাজ। সংগঠনটি দাবি করছে, ইসরায়েল যেন অবিলম্বে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় বসে এবং গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করে।  


ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটি এক সপ্তাহের মধ্যে গাজার বিরুদ্ধে নতুন কৌশল বাস্তবায়ন করতে পারে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা, হামলা চালানো এবং ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।  


গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় তিন-পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এতে বন্দি বিনিময়, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অবস্থান যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনাকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।  


জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজায় ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অবকাঠামোর ৬০ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে।  


ইসরায়েল ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও দেশটি আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে এবং নতুন নতুন কৌশল বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে। গাজার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নির্ভর করছে আসন্ন ঘটনাগুলোর ওপর।