মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ফিলিস্তিনিদের বিপক্ষে পদক্ষেপ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান এবং একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন। এই পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন ইহুদিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হুমকি, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও সহিংসতা সম্পর্কিত কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ফেডারেল সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে। এর আগে, ট্রাম্প প্রবাসী ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেসব শিক্ষার্থী জিহাদপন্থী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন, তাদের নজরদারিতে রাখা হবে এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে হামাসের প্রতি সহানুভূতি দেখানো বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হবে।
এই পদক্ষেপে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনকারীরা এই পদক্ষেপকে স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলনকারীদের ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবে দেখতে শুরু করেছেন। তাদের মতে, ট্রাম্প এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের আওয়াজ বন্ধ করতে চাইছেন এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের সমর্থন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হামলা চালায় হামাস। এর ফলে ইসরায়েলে ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয় এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে হামাস। এরপর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে, যার ফলে গাজায় অন্তত ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, যেখানে শত শত শিক্ষার্থী গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনকারীরা এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের একরোখা মনোভাব হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের স্বাধীন মতপ্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কৌশল।
এদিকে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে এবং এর মাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারকে হুমকির মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী একটি মৌলিক অধিকার, আর ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে সেই অধিকারকে খর্ব করার চেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।