রাজনৈতিক ঐকমত্যে আশাবাদী ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: সোমবার ২০শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:২৯ অপরাহ্ন
রাজনৈতিক ঐকমত্যে আশাবাদী ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চলমান সংস্কার কার্যক্রম ও জুলাইয়ের ঘোষণার ভিত্তিতে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরিতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন দূতাবাসের নতুন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা এবং সরকারের অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা হয়।  


মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বাংলাদেশের উন্নয়ন, সন্ত্রাস দমন, এবং অন্যান্য বিষয়ে তার দেশের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি কিছু সাংবাদিকের গ্রেপ্তার এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করে বলেন, তার সরকার দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বৈঠকে তিনি জানান, সরকার সহায়কের ভূমিকা পালন করবে এবং তার মূল লক্ষ্য একটি ঐকমত্য তৈরি করা।  


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশেষ গুরুত্ব দেয়। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির জন্য এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মার্কিন সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তার জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান।  


তিনি সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে তার সাম্প্রতিক পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, সার্ককে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, সার্কের ধারণাটি বাংলাদেশ থেকেই এসেছে এবং দেশটি এর সূচনা করেছে।  


বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের পোশাক ও টেক্সটাইল খাত থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করার আহ্বান জানান।  


প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতি, সংস্কার কার্যক্রম, এবং সুশাসনের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকটি উভয় দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।