ইসরায়েলি বাহিনীর সিরিয়ায় নতুন হামলা: গোলান মালভূমি এবং নিরাপত্তা সঙ্কট

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌরভ নূর , বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৩ই ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:১৩ অপরাহ্ন
ইসরায়েলি বাহিনীর সিরিয়ায় নতুন হামলা: গোলান মালভূমি এবং নিরাপত্তা সঙ্কট

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের শক্তিশালী আক্রমণের পর, দেশটির সরকার পতনের পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী আবারও সিরিয়ায় হামলা চালাতে শুরু করেছে। গত রোববার, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নাটকীয়ভাবে দেশত্যাগ করে রাশিয়ায় চলে যাওয়ার পর, ইসরায়েল চার শতাধিক হামলা চালিয়েছে। বিশেষত, গোলান মালভূমি এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকা লক্ষ্য করে এই হামলাগুলো পরিচালিত হচ্ছে।


১৯৭৪ সালের একটি চুক্তি অনুযায়ী, গোলান মালভূমি অঞ্চলে সিরিয়া ও ইসরায়েল একটি নিরস্ত্রীকরণ অঞ্চল (বাফার জোন) গঠন করে। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী এখন ওই বাফার জোন পেরিয়ে সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে, যা জাতিসংঘের আপত্তি সত্ত্বেও চলেছে। গোলান মালভূমির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই বর্তমানে ইসরায়েলের দখলে রয়েছে এবং বাশার আল-আসাদের পতনের পর, এই অঞ্চলের ৪০০ বর্গকিলোমিটারও ইসরায়েল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।


ইসরায়েলের হামলার পেছনে মূলত দুটি কারণ রয়েছে: একদিকে তারা দাবি করছে যে, সিরিয়ায় ইরানের সামরিক উপস্থিতি রুখতে এবং ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর শক্তি বৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে হামলা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল দাবি করছে যে, তারা সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, অস্ত্রাগার ও বিমানবন্দর লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে যাতে চরমপন্থীদের হাতে অস্ত্র না পৌঁছায়। 


প্রতিবেশী দেশ লেবানন, গাজা উপত্যকা ও সিরিয়ার গোলান মালভূমির বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংকগুলো সিরিয়ার সীমান্তের ১০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে, যা রাজধানী দামেস্কের খুব কাছে। তবে, ইসরায়েলের সামরিক সূত্র এসব দাবি অস্বীকার করেছে। 


ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন যে, গোলান মালভূমি অঞ্চলের সিরিয়ার অংশ “চিরকাল” তাদের অধীনে থাকবে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেন সারও সিরিয়ায় হামলার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন, এবং দাবি করেছেন যে, এসব হামলা সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র এবং দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে, যাতে এসব অস্ত্র প্রতিবেশী দেশের হাতে না পড়ে। 


ইসরায়েলের এই অভিযানের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, বিশেষ করে সিরিয়ার সরকার পতনের পর যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।