এশিয়া সফরে আসছেন বাইডেন, ৫ সামরিক হটস্পটে যে ভূমিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২০শে মে ২০২২ ০৮:১৬ অপরাহ্ন
এশিয়া সফরে আসছেন বাইডেন, ৫ সামরিক হটস্পটে যে ভূমিকা

চলতি সপ্তাহে এশিয়া সফরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন তিনি। খবর সিএনএনের। এমন এক সময়ে তার সফর, যখন তাইওয়ান, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ চীন সাগর, ভারত-চীন সীমান্ত ও কুরিল দ্বীপপুঞ্জে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা চলছে।


ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রভাব দেখেছে এসব অঞ্চল। এতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ অভিযানের শিক্ষা এশিয়ার বড় খেলোয়াড় দেশগুলো নিয়মিত মূল্যায়ন করছে।


তাইওয়ান

চীন উপকূল থেকে ১১০ মাইলেরও কম দূরত্বে দ্বীপাঞ্চল তাইওয়ান। গেল ৭০ বছর ধরে দুই অঞ্চল আলাদাভাবে শাসিত হয়ে আসছে। কিন্তু তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করা থেকে বিরত থাকতে দেখা যায়নি চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিকে (সিসিপি)। যদিও তারা কখনোই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি।


এ ঘটনায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় শক্তি জাপানকেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে। তাইওয়ানের চারপাশের জলপথ দিয়ে জাপানের ৯০ শতাংশ জ্বালানি আমদানি হয়। দ্বীপাঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের সঙ্গে জাপানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা গভীরভাবে জড়িত।


তাইপের আত্মরক্ষায় সমর্থন দিতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারাবদ্ধ। যদিও সরাসরি সেনা দিয়ে তারা দ্বীপটিকে রক্ষা করতে যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র, তার মিত্র দেশগুলো এবং চীনের জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ বড় শিক্ষা হয়ে এসেছে।


কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক পেটার হ্যারিস লিখেছেন—চীন যদি তাইওয়ানের সঙ্গে যুদ্ধে যায়, তবে তা পরমাণু যুদ্ধে রূপ নেবে, বেইজিংকে এই সহজ কথাটি বোঝানো মার্কিন নেতাদের জন্য ব্যাপক কঠিন হবে।


তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধে জড়ানোর ভয়ে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন বাইডেন। এ ঘটনা মার্কিন বন্ধু দেশগুলো দেখেছে।


ন্যাটোমিত্রসহ বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চল ইউক্রেনের সঙ্গে আছে। তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে। যে কারণে প্রতিবেশী রাশিয়া সামরিক সফলতা অর্জন করতে পারেনি।


তার মতে, এতে তাইওয়ানে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে চীনের মধ্যে ভয় কাজ করবে। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে দেশগুলো কী পদক্ষেপ নেয়, তা নিয়ে চীনের শঙ্কা কাজ করছে। ইউক্রেন থেকে শিক্ষা নিয়ে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপিন্সসহ অন্য দেশগুলো তাদের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে। একটি আগ্রাসী বৃহৎ চীনের মুখোমুখি হয়ে তাদের সামনে এর কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে চীনকে কোনো সন্দেহের মধ্যে রাখা যাবে না।


এশিয়ায় আগামী সপ্তাহে মিশনে নামতে যাওয়া বাইডেন এসব কিছু মাথায় রেখেছেন। চীনের যে কোনো যুদ্ধমুখী অবস্থান প্রতিরোধে পুরো অঞ্চলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।


উত্তর কোরিয়া

এ বছরে রেকর্ডসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে কিং জং উনের সরকার। এছাড়া ২০১৭ সালের পর প্রথম কোনো পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে উত্তর কোরিয়া।


পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে আলোচনার পর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের বৈঠকও ব্যর্থ হয়েছে।


সিউলের ইউয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লেইফ-এরিক এয়াসলি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নজর কাড়তে ও আলোচনা শুরু করতে উত্তর কোরিয়া বিভিন্ন অস্ত্র পরীক্ষা বাড়িয়েছে। অন্য দেশকে নিবৃত্ত করতে, হুমকি দিতে ও ভয় দেখাতে সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে পিয়ংইয়ং।


ইউক্রেন সংকট দেখা দেওয়ার আগে এসব ছিল রুশ নাটকের বইয়ের পাতার মতো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কোরীয় উপদ্বীপের জন্য শিক্ষামূলক ভূমিকা রাখছে।


তিনি বলেন, রাশিয়ার অভিযান দেখিয়েছে, শান্তি প্রতিষ্ঠায় যে মূল্য দিতে হয়, তার চেয়ে যুদ্ধের খেসারত অনেক বেশি। কেবল প্রাণক্ষয়ের কারণেই না, এতে বিপুল সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়। কারণ সামরিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে লোকজন তাদের সক্ষমতার অতিমূল্যায়ন করেন। এরপর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়ান। এ সময়ে দীর্ঘমেয়াদে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতির বিষয়টিও তাচ্ছিল্যের চোখে দেখে তারা।


লেইফ-এরিক এয়াসলির মতে, প্রশান্ত মহাসারগীয় অঞ্চলে আমেরিকার অংশীদারত্বকে জোরদার করে উত্তর কোরিয়ার সামনে থাকা হুমকি প্রশমিত করতে পারেন বাইডেন। যৌথ মহড়া, প্রতিরক্ষা সহযোগিতার মাধ্যমে বৈরী শক্তির হুমকির নিবৃত্তি আরও কার্যকর করতে সিউল ও ওয়াশিংটনকে সম্ভাব্য বিকল্প বের করতে হবে।


কুরিল দ্বীপপুঞ্জ

দ্বীপপুঞ্জটি রুশদের ভাষায় দক্ষিণাঞ্চলীয় কুরিল আর জাপানিরা বলেন উত্তরাঞ্চলীয় ভূখণ্ড। ১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তির কাছে জাপান আত্মসমর্পণ করলে অঞ্চলটির দখলে নেয় সোভিয়েত বাহিনী। এরপর থেকে দ্বীপপুঞ্জটিতে ন্যায়সঙ্গত কর্তৃত্ব নিয়ে মতানৈক্য চলছে। এ নিয়ে জাপান ও রাশিয়ার সম্পর্কে তিক্ততা অব্যাহত। যে কারণে দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী শান্তিচুক্তি সই এখনো সফল হতে পারেনি।


ইউক্রেন সংঘাতের পর টোকিও ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যা সর্বোচ্চ মাত্রায়। যে কারণে প্রতিবেশী দেশে রাশিময়ার সামরিক অভিযানের ভরাট কণ্ঠে নিন্দা জানাচ্ছে জাপান। রাশিয়ার বিরুদ্ধে তারা পশ্চিমাদের নীতিই অনুসরণ করছে। ইতিমধ্যে তারা মস্কোর কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে, দিয়েছে নতুন নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে জাপান।


পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি বেড়েছে। জাপান ও রাশিয়ার মধ্যকার জলপথে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে মস্কো। জাপানকে প্রদক্ষিণ করে চীনা নৌমহড়ায়ও অংশ নিতে দেখা গেছে রাশিয়াকে।


ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের রবার্ট ওয়ার্ড বলেন, এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে নিজেদের উত্তর প্রান্তে হুমকি অনুভব করছে জাপান। সেখানকার পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবেই পরিবর্তিত হয়েছে।


আবার দক্ষিণে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি। এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরের সেনকাকু দ্বীপের মালিকানা নিয়েও চীনের সঙ্গে জাপানের তিক্ততা রয়েছে। পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি থাকার কারণে এ নিয়ে বাইডেনের উদ্বেগ রয়েছে। জাপানি সার্বভৌম অঞ্চলের যে কোনো অংশ রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার রয়েছে।


এক নম্বর মিত্র হিসেবে জাপানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির যদি সামান্যও নড়বড়ে হয়, তবে বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে মার্কিন অঙ্গীকার নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হবে। তখন যুক্তরাষ্ট্রকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করে ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও। এছাড়া রাশিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েও ইউরোপীয় দেশগুলোতে উদ্বেগ রয়েছে।


দক্ষিণ চীন সাগর

সাগরটির প্রায় তেরো লাখ বর্গ মাইলের মালিকানা দাবি করছে চীন। যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার টানাপোড়েনের বড় একটি উৎস দক্ষিণ চীন সাগর। তাইওয়ান, উত্তর কোরিয়া ও কুরিল দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায় রাশিয়া। এতে দক্ষিণ চীন সাগরে চীন-জাপান টানাপোড়েনের পারদ আরও চড়া হয়ে ওঠে।


সিঙ্গাপুরের এস. রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষক কোলিন কোহ বলেন, ২০২২ সালে নিজের ফ্রিডাম অব নেভিগেশন অপারেশন (এফওএনওপিস) কাটছাঁট করতে পারে মার্কিন নৌবাহিনী। এই অভিযানের অংশ হিসেবে চীনা-অধিকৃত বিতর্কিত দ্বীপগুলো ঘেঁষে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ চলাচল করে। কারণ জানুয়ারিতে এ রকম মাত্র একটি নৌযাত্রা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।


কোলিন কোহ বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে আগে যে সামরিক নজর দিয়েছিল, তা সরিয়ে নতুন ভূ-অর্থনীতিভিত্তিক পদক্ষেপের দিকে চোখ ফিরিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি বাইডেনের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) নেতারা হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন। এতে সামরিক পদক্ষেপের বদলে অর্থনৈতিক, উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসেবার অঙ্গীকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।


এছাড়া নিরাপত্তা পদক্ষেপ নিয়ে আসিয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে চুক্তি হয়েছে, তাতে এ অঞ্চলকে একটি কোস্টগার্ড কাটার ও প্রশিক্ষণ টিম সরবরাহের কথা বলা হয়। এর বাইরে বড় কোনো সামরিক পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি। এছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী যেভাবে খাবি খাচ্ছে, চীনের জন্য তা বড় শিক্ষা হতে পারে।


ইউক্রেনের আকাশপথে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারেনি রাশিয়া। কিয়েভে মস্কোর ব্যর্থতার অন্যতম কারণ এটি। কোলিন কোহ বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরের সর্ব দক্ষিণে স্প্রাটলি আইল্যান্ড চেইনের সামরিক দ্বীপগুলোকে রক্ষা করতে গেলে বেইজিংকেও একই সমস্যায় পড়তে হতে পারে।


এই সামরিক বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় মূল ভূখণ্ড বরাবর উপকূলীয় কেন্দ্রবিন্দু থেকে আকাশ ও সাগর পথে যোগাযোগের লাইন এবং ফাঁড়ি অনেক দীর্ঘ হবে। তারা যদি আকাশ ও নৌপথে আধিপত্য নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তবে এগুলোকে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। এমনকি দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু অঞ্চল যদি প্রাথমিকভাবে চীন অধিকার করতেও পারে, তাতে দীর্ঘমেয়াদে তাতে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা দেশটির জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।


ভারত-চীন

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর কয়েক দশক ধরে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে অচলাবস্থা চলছে। হিমলায় অঞ্চলে চীন-ভারত সীমান্ত নিয়ে অস্পষ্টতা বহু বছর ধরে দুদেশের টানাপোড়েনের মূল উৎস। এশিয়া সফরে বাইডেনের মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে জটিল সামরিক সংকট এটি।


২০২০ সালে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে প্রাণঘাতী লড়াই হয়েছে। এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী হতে থাকে ভারত। ওয়াশিংটনকে আশ্রয় করেই সামরিক পরিকল্পনা করে নয়াদিল্লি। যদিও দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তিটির সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী রাশিয়া।


এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মিলে কোয়াড গঠন করে ভারত। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আধিপত্য ও প্রভাব রুখে দিতে চার দেশের এই অনানুষ্ঠানিক জোট সক্রিয় রয়েছে।


ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সামরিক সহায়তা ছাড়াও রাশিয়া থেকে গ্যাস ও তেল আমদানি করে ভারত। যে কারণে ইউক্রেন সংঘাত সত্ত্বেও নয়াদিল্লিকে মস্কো থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা যায়নি। কোয়াডের অন্য সদস্যরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিলেও ভারত বিরত ছিল।


কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ও অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিচালক হর্ষ ভি. পন্ত বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের দুটি অনুঘটক ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে পড়তে বাধ্য করবে। প্রথম নয়াদিল্লিকে গোয়েন্দা, নজরদারি ও পর্যবেক্ষণ যন্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে ওয়াশিংটন। দ্বিতীয়ত, চীনের সামরিক সক্ষমতা পর্যবেক্ষণ ওও পর্যালোচনা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে ভারত। এই জায়গা থেকে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র একইপথের পথিক। ইউক্রেনের ঘটনা দুদেশকে এক জায়গা নিয়ে এসেছে।


এছাড়া ভারতের প্রায় অর্ধেক সামরিক অস্ত্রের সরবরাহকারী রাশিয়া। কিন্তু এতে মস্কোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হর্ষ ভি. পন্ত বলেন, সামরিক যন্ত্রাংশের উৎস নিয়ে ভারতকে খুবই সতর্ক থাকতে হচ্ছে। রাশিয়া যদি যুদ্ধে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে ভারতের অস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও খচরা যন্ত্রপাতি আসবে কোথা থেকে? সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় উৎস হতে পারে।


ভারতের নিজস্ব আধুনিক অস্ত্র উৎপাদনে প্রযুক্তি দিয়েও সহায়তা করতে পারবে পশ্চিমা মিত্ররা। আগামী সপ্তাহে টোকিওতে কোয়াড নেতাদের বৈঠকে এ নিয়ে একটি ঐকমত্য আসার সম্ভাবনাও আছে।