প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ৯:৪৪
বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির অগ্রগতি শুধু অফিস বা ব্যবসায়িক কাজে সীমাবদ্ধ নয়, তা এখন আমাদের ঘরেও পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশেও স্মার্ট হোম প্রযুক্তির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে যারা আধুনিক জীবনের আরাম ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান, তারা এই প্রযুক্তিকে গ্রহণ করছেন আগ্রহভরে।
স্মার্ট হোম বলতে এমন একটি বাড়িকে বোঝায় যেখানে লাইট, ফ্যান, এসি, তালা বা নিরাপত্তা ক্যামেরা সবকিছুই স্মার্টফোন, ট্যাব বা ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই সুবিধাগুলো কেবল বিলাসিতা নয়, বরং সময় ও শক্তি সাশ্রয়ের দিক থেকেও কার্যকর।
ঢাকার মিরপুরে বসবাসকারী প্রকৌশলী হাসান আলী জানান, তিনি তার বাসার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় স্মার্ট ক্যামেরা ও সেন্সর যুক্ত করেছেন যা তাকে অফিসে থেকেও ঘরের খোঁজখবর রাখতে সহায়তা করে। এর ফলে চুরি বা অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবেশের ঝুঁকি অনেকটাই কমে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্ট হোম প্রযুক্তি শুধু নিরাপত্তাই নয়, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারেও সাশ্রয় নিশ্চিত করতে পারে। যেমন সেন্সরের মাধ্যমে বাতি বা এসি তখনই চালু হয় যখন ঘরে কেউ থাকে। এতে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে তা পরিবেশ রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে।
দেশীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও এখন স্মার্ট হোম ডিভাইস উৎপাদনে মনোযোগী হচ্ছে। Walton, Vision, এবং কিছু স্টার্টআপ ইতিমধ্যেই স্বল্পমূল্যে স্মার্ট লক, সিকিউরিটি ক্যামেরা ও স্মার্ট সুইচ বাজারে এনেছে, যা মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যে।
তবে এ প্রযুক্তির একটি দুর্বল দিক হলো নির্ভরতা ইন্টারনেট সংযোগের ওপর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো উচ্চগতির ইন্টারনেট সার্বক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা কঠিন। এছাড়া, হ্যাকিং বা সাইবার হামলার আশঙ্কাও রয়ে গেছে, যাকে গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো জরুরি।
সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ উদ্যোগের আওতায় এসব প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করতে কাজ চলছে। পাশাপাশি, ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হলে এটি আরও বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্মার্ট হোম প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কেবল আরামদায়ক নয়, বরং আরও নিরাপদ ও টেকসই করে তুলছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহার আরও বাড়বে এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যতকে বাস্তবে রূপ দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।