শাহবাগে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আন্দোলন, পুলিশে ছত্রভঙ্গ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: সোমবার ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:১৫ অপরাহ্ন
শাহবাগে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আন্দোলন, পুলিশে ছত্রভঙ্গ

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সোমবার দুপুরে আন্দোলন করছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। তারা তাদের নিয়োগ বাতিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে এবং লাঠিচার্জ করে। পরে, সীমিত পরিসরে যান চলাচল শুরু হয়।


আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, তাদের নিয়োগ বাতিলের যে রায় দেওয়া হয়েছে তা বৈষম্যমূলক এবং অযৌক্তিক। তারা জানান, সরকার নিজেই তাদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিল, কিন্তু এখন তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে, যা তাদের জন্য প্রতারণার সমান। আন্দোলনকারীরা দ্রুত রায় বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন এবং তাদের নিয়োগ চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।


আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাব্বির সাদেক নামের একজন আন্দোলনকারী বলেন, "যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ আমরা এখান থেকে সরব না।" তিনি আরও বলেন, তারা সরকারের পক্ষ থেকে অবিচার সহ্য করবেন না এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।


এর আগে, ৬ ফেব্রুয়ারি, হাইকোর্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করে। আদালত মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।


গত বছরের ১৯ নভেম্বর, হাইকোর্ট এই ৬ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষকের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিল। এর ফলে শিক্ষকরা দীর্ঘ সময় ধরে অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছেন, যা তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।


শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, তারা ২০১৯ সালে এই পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষায় অংশ নেন এবং সরকারের সুপারিশে তাঁরা সফল হন। কিন্তু এখন তাদের নিয়োগ বাতিল হওয়া তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা দাবি করেছেন যে, মেধার ভিত্তিতে তাদের পুনরায় নিয়োগ দেওয়া উচিত এবং এই রায় বাতিল করা উচিত।


এদিকে, আন্দোলনের পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়। তবে, আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি নিয়ে আরও আন্দোলন চালানোর পরিকল্পনা করছেন। তাদের দাবি যতদিন না পূর্ণাঙ্গভাবে মীমাংসিত হচ্ছে, ততদিন তারা তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবেন।