বাংলাদেশকে ভেঙে নতুন দেশ গঠনের ইচ্ছে ভারতের-বিজেপি নেতা কিশোর

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:১১ অপরাহ্ন
বাংলাদেশকে ভেঙে নতুন দেশ গঠনের ইচ্ছে ভারতের-বিজেপি নেতা কিশোর


ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির মিত্র দল ত্রিপুরা মোথার শীর্ষ নেতা প্রদ্যোত কিশোর বাংলাদেশকে ভাঙার হুমকি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও উপজাতিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ত্রিপুরায় একটি মিছিল করেছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলটি। এই মিছিলে প্রদ্যোত কিশোরের উক্তি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।


মিছিলে প্রদ্যোত কিশোর বলেন, “বাংলাদেশকে ভেঙে নতুন একটি দেশ তৈরির সক্ষমতা আমাদের আছে।” তিনি অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন চলছে এবং ভারতের সহযোগিতার কারণে বাংলাদেশ অস্তিত্বে রয়েছে। তিনি মন্তব্য করেন, “যদি ত্রিপুরা সাহায্য না করত, তাহলে বাংলাদেশও হতো না এবং মুক্তিবাহিনী বলে কিছু থাকত না।”


প্রদ্যোত কিশোর আরো বলেন, “ভারত চুপ ছিল কারণ শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা ভারতের বন্ধু ছিলেন। কিন্তু এই বন্ধুত্ব এখন আর নেই।” তার এ বক্তব্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নীতির ওপর ভারতীয় হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দিচ্ছে।


তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবি জানিয়ে বলেন, “যদি বাংলাদেশিরা আমাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে, আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, পাকিস্তান ভেঙে ভারত বাংলাদেশ তৈরি করেছে। বাংলাদেশ ভাঙার সক্ষমতা ভারতের রয়েছে।” কিশোরের এই উক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলিতে ভারতীয় হস্তক্ষেপের একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা উভয় দেশের সম্পর্কের জন্য একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।


এদিকে, ত্রিপুরার স্থানীয় রাজনৈতিক দলটির এই কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা এ ধরনের বক্তব্যকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে গভীর নজর রাখছে বলে জানা গেছে।


প্রদ্যোত কিশোর তাঁর পরিবারকে ইতিহাসে উল্লিখিত করে বলেন, “আমরা আগে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম শাসন করেছি। তখন সবাই মিলেমিশে ছিল। কিন্তু এখন সেই অবস্থা নেই।” এই মন্তব্যগুলো বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক সংকেত হিসেবে গৃহীত হচ্ছে।


বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রদ্যোত কিশোরের এই বক্তব্য ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, যখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক বিভিন্ন ইস্যুতে চাপের মধ্যে রয়েছে, তখন এ ধরনের বক্তব্য সামগ্রিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে।


রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশা করছেন, উভয় দেশের সরকার এই ধরনের বক্তব্যের প্রতি মনোযোগ দেবে এবং সম্পর্ক উন্নয়নে সচেষ্ট হবে। তবে, ত্রিপুরা মোথার নেতার হুমকি বাংলাদেশে প্রভাব ফেলতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হবে।