রাঙ্গুনিয়ায় বন্যায় প্লাবিত ৭ ইউনিয়ন, ডুবেছে ঘরবাড়ি কৃষি জমি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৩শে আগস্ট ২০২৪ ০৭:৪০ অপরাহ্ন
রাঙ্গুনিয়ায় বন্যায় প্লাবিত ৭ ইউনিয়ন, ডুবেছে ঘরবাড়ি কৃষি জমি

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উত্তর রাঙ্গুনিয়ার ইছামতী সংলগ্ন ৭টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ইছামতী নদীর পানি উপচে এসব ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও মৎস্য পুকুর তলিয়ে গেছে, ধসে গেছে বেশ কিছু সড়ক। এছাড়া পাহাড়ধসেও কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

 

শুক্রবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, হোছনাবাদ, লালানগর, দক্ষিণ রাজানগর, রাজানগর, ইসলামপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উত্তর রাঙ্গুনিয়া অঞ্চলের যোগাযোগের দুটি প্রধান মাধ্যম মরিয়মনগর-গাবতল ও ঘাটচেক-রানীরহাট ডিসি সড়ক দুটিতে ৩-৫ ফুট উচ্চতায় পানি উঠে ডুবে গেছে। এই দুটি সড়কসহ একাধিক অংশে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাস্তার দুপাশে শতশত গাড়ি আটকা পড়ে যায়, যোগাযোগে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীসহ সাধারণ জনগণের। গতকাল বিকেল পর্যন্ত মোগলেরহাট এলাকায় পানি বৃদ্ধির ফলে অনেকে আটকা পড়েছেন। এসময় আটকা পড়া অনেক শিশু ও মহিলাদের আহাজারি করতে দেখা যায়। স্থানীয়রা এখানে দড়ি বেঁধে কয়েকজনকে উদ্ধার করলেও আটকা আছে একাধিক মানুষ। স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া এলাকায় বেশ কিছু গ্রামে মানুষ পানিতে আটকে পড়েছে। তাদের অধিকাংশ আবার অনেকের পাঁকা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। 


এদিকে, রাঙ্গুনিয়ার অংশে রাঙ্গামাটি মহাসড়কে বন্যার পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঠে কাজ করছে গাউসিয়া কমিটি, বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত রাজনৈতিক দল বিএনপি, আওয়ামীলীগ, জামাতসহ সাধারণ মানুষ।


এইসময় তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে আমরা গতকাল সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ভ্যানে সাধারণ জনগণকে বিনামূল্যে পারাপার করে দিয়েছি। বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত টিম গঠন করে কাজ শুরু করেছি। যাত্রীদের মাঝে পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। 


বন্যা কবলিত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে হাসান বলেন, “ঘরেও পানি ঢুকেছে, গরুর গোয়ালঘরেও পানি ঢুকেছে। গরুগুলো অন্যত্র সরিয়ে রেখেছি। কিন্তু পানি না কমলে আজ হয়তো ঘরে থাকা যাবে না।”


লালানগর ইউনিয়নের তালুকদার পাড়ার বাসিন্দা মো. মান্নান বলেন, “ইছামতী খালের পাশে রাখা আমার প্রায় আড়াই লাখ টাকার কাঠ পানির স্রোতে নিয়ে গেছে। এছাড়াও রাজারহাট মিলে রাখা বেশ কিছু গাছ পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। আমি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।”


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, উত্তর রাঙ্গুনিয়া এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্যাদুর্গতদের খোঁজখবর নিয়ে একই সাথে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।