বিষয়টি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান বা আইপিএলের খেলার মতোই। দেশি খেলোয়াড়দের ওপর ভরসা না পেয়ে বিদেশি খেলোয়াড়কে নিয়ে ম্যাচ জেতার প্রচেষ্টা! ভোট যুদ্ধে বাংলাদেশি নায়ক ফেরদৌসের পর এবার পশ্চিমবঙ্গে আরও এক অভিনেতা গাজি আবদুন নূরকে মাঠে নামলো তৃণমূল। সৌজন্যে অবশ্যই মদন মিত্র। আর এক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণ হলে উভয়ের ৫বছরের জেল ও জরিমানা হতে পারে। শুক্রবার কামারহাটির শুকতারা মাঠ থেকে আয়োজিত দমদম লোকসভার প্রার্থী সৌগত রায়ের সমর্থনে আয়োজিত রোডশোতে বাংলা টিভি চ্যানেলে রানী রাসমনী সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেতা নূরকে তৃণমূলের পতাকা লাগানো হুড খোলা জিপে করে প্রচার করলেন রাজ্যর প্রাক্তণমন্ত্রী মদন মিত্র। শুধু তাই সোশ্যাল মিডিয়া এই প্রচারের কথা আগাম স্ট্যাটাস দিয়েও জানিয়েছিলেন মদনবাবু। তার সমর্থকরা যাতে নূরকে নিয়ে এই প্রচারের ঘটনা দেখতে পারে তার জন্য নিজের পেজ থেকে লাইভও দেন মদন মিত্র।
বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাটের বাসীন্দা অভিনেতা নূর বর্তমানে রানী রাসমনি সিরিয়ালে রাসমনির স্বামী রাজেন্দ্র দাসের চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। সেই জনপ্রিয়তাকেই টার্র্গেট করে মদনবাবু বিদেশি এই অভিনেতাকে ভোটযুদ্ধে নামিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে এটা কি করে সম্ভব? ইতিমধ্যেই বাংলাদেশি নায়ক ফেরদৌসের রায়গঞ্জে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছে বিজেপি। বাম-কংগ্রেসও এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ অম্বিকা রায় বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘আমার জানা মতে এধরণের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এক্ষেত্রে ভারতীয় ভিসা আইনের লঙ্ঘন করা হয়েছে। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনও বিদেশি তিনি যে ভিসার ক্যাটাগরিতে এদেশে আসুক না কেন তিনি এটা করতে পারেন না। এটা খুবই মারাত্বক অপরাধ। এর জন্য আভ্যন্তরীন শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে।’ ভারতীয় ভিসা আইনকে উল্লেখ করে অম্বিকাবাবু আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের ভিসা আইনে কোনও রাজনৈতিক ভিসার ক্যাটাগরি নেই। ভিসার আবেদন পত্রে বিদেশিদের লিখতে হয় তিনি কি কারণে ভারত ভ্রমণে যেতে চান। কনফারেন্স ভিসা ক্যাটাগরিতে বিদেশি রাজনৈতিকদলের নেতারা এদেশে এলেও তাদের ক্ষেত্রেও বলা আছে রাজনৈতিক বা সামাজিক সর্ম্পশকাতর বিষয়ে ভিসা দেওয়া হবে না।’
আইনে চোখে বিদেশিদের এদেশে রাজনৈতিক কর্মকান্ড করা অপরাধ এবং তার জন্য শাস্তি হতে পারে বলে জানিয়ে তিনি বলেন,‘ ভিসা আইনকে না মানলে ফরেনার্স এম্যামেন্ট) অ্যাক্ট ২০০৪ এর সেকশান ১৪( সাবক্লজ বি ও সি)-তে ৫ বছরের জেল ও জরিমানার কথা বলা আছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় থানাকে দিয়ে ওই বিদেশির বিরুদ্ধে এফআইআর করে তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করতে পারে।’ ফেরদৌস বা নূরের ক্ষেত্রে যেসব তথ্য আছে তা তাদের আদালতে পেশ করার পক্ষে যথেষ্ট বলে অম্বিকাবাবু বলেন,‘ এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি বা ভিডিও ফুটেজ এবং সোশ্যাল মিডিয়া যা প্রকাশ পেয়েছে তা দিয়েই মামলা হতে পারে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।