‘বাংলাদেশের যেসব মডেল, সেলেব আর অভিনেত্রীর রোজগার শরীর বেচে’! এটি একটি সংবাদের শিরোনাম! কাণ্ডজ্ঞানহীন এই সংবাদটি ছেপেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যম ‘এই সময়’। কট্টর হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী এই পত্রিকাটি প্রায় সময়ই গুজব-গুঞ্জনের সংবাদ ছেপে সমালোচনার শিকার হয়। এটাকেই তারা নিজেদের পাঠকপ্রিয়তার যোগ্যতা করে নিয়েছে। অপেশাদারিত্বের চরম নমুনা বহুবার প্রকাশ করেছে ‘এই সময়’। যার কারণে পত্রিকাটি নিজের দেশের পাঠকদের কাছেই নিন্দিত। তবে লক্ষ্য করা গেছে, বাংলাদেশ নিয়ে ‘এই সময়’র বিশেষ বাজে মনোভাব রয়েছে। এর আগে নানা ইস্যুতে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে মনগড়া তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করে এ দেশের ক্রিকেটকে হেয় করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। উসকানি দিয়েছে উগ্রবাদের।
এবার তারা ছোট করার জন্য বেছে নিল বাংলাদেশের শোবিজের স্বনামধন্য একঝাঁক তারকাকে। প্রভা, নোভা, ইভা রহমান, চৈতী, বিন্দু, তিন্নি, মিম, শখ, সারিকা, মিলা, মেহজাবীনের মতো প্রতিষ্ঠিত তারকাদের দেহ ব্যবসায়ী স্বীকৃতি শিরোনাম করে সংবাদ প্রকাশ করেছে। এই সংবাদের প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের শোবিজ সংশ্লিষ্টরা। পত্রিকাটি উল্লিখিত তারকাদের নাম দিয়ে তাদের অনলাইন ভার্সনে লিখেছে, এরা বিভিন্ন সময় সেক্স স্ক্যান্ডালে জড়িয়েছেন। যদিও তার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। বিভিন্ন সময় অনলাইনে ছড়ানো নানা গুজব-গুঞ্জনকে সূত্র করেই শিরোনামে তারকাদের ‘দেহ ব্যবসায়ী’ বলে দাবি করা হয়েছে। ‘এই সময়ের’ সেই প্রতিবেদনটি পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হল-
বাংলার যে সব মডেল, অভিনেত্রী আর সেলেবদের রোজগার শরীর বেচে!
হলিউডে সেলেব্রিটিদের স্ক্যান্ডাল নিয়ে প্রায়ই হৈচৈ শোনা যায়। এই অভিযোগে নাম জড়িয়েছে বেশ কিছু টলিউড অভিনেত্রীদেরও। এমনকী বাদ যাননি বাংলাদেশের বিনোদন জগতের তারকারাও। কখনো কখনো স্ক্যান্ডাল তারকাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে দেখা এয়। যেমন- সেক্স স্ক্যান্ডাল দিয়ে রাতারাতি বড় তারকা বনে গিয়েছেন হলিউডের কিম কার্দেশিয়ানের মতো অনেক তারকা।
তবে বাংলাদেশে সেক্স স্ক্যান্ডালের কারণে অনেকের কেরিয়ারে ধস নেমেছে। এমনই ঢাকার আলোচিত ১২ অভিনেত্রীকে চিনে নিন।
প্রভাঃ ২০১০ সালের বাংলাদেশ জুড়ে বোধহয় সবচেয়ে আলোচিত নাম জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা। প্রভার বয়ফ্রেন্ড রাজীব একটি ভিডিয়ো ফুটেজ বাজারে ছাড়লে দেশের শীর্ষ মডেল ও অভিনেত্রী কেরিয়ারে থেকে সরে পড়তে বাধ্য হন। রাজীব ও প্রভার বিয়ে পারিবারিকভাবেই চূড়ান্ত হয়েছিল। তাই অনেকটা দাম্পত্য জীবনের মতোই ছিল তাদের সম্পর্ক। কিন্তু এর মাঝে অভিনেতা অপূর্বর সাথে প্রভার মন দেওয়া-নেওয়া হলে প্রভা পালিয়ে অপূর্বকে বিয়ে করে বসেন। এরপরই প্রতিহিংসার বশে রাজীব তার হবু স্ত্রী প্রভার একান্ত সময়ের কিছু ফুটেজ ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন। দীর্ঘ ২ বছর মিডিয়া থেকে আড়ালে ছিলেন প্রভা।
ইভা রহমানঃ সঙ্গীতশিল্পী ইভা রহমানের নামে একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্যের ভিডিয়োর ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। ভিডিয়ো দৃশ্যে দেখা যায়, একটি হোটেল কক্ষে এক বিদেশীর সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে আছেন ইভা রহমানের মতো দেখতে এক নারী। পরে এটি অবশ্য গুজব বলেই প্রমাণিত হয়।
তিন্নিঃ সেক্স স্ক্যান্ডালের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন মডেল অভিনেতা তিন্নি-হিল্লোল। দেশজুড়ে আলোচিত সমালোচিত হন তারা। একটি হোটেলের ঘরে তরুণ-তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো ফুটেজ তাঁদের নামে ছেড়ে দেওয়া হয় বাজারে। ভিডিয়োটির পাত্র-পাত্রী হিসেবে চলে আসে এ জুটির নাম। যদিও এই ভিডিয়োটির সত্যতা মেলেনি। কিন্তু সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পাননি এই তারকাজুটি।
চৈতিঃ প্রভার আপত্তিকর ভিডিয়ো চিত্র প্রকাশ হওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই ২০১১ সালে মডেল ও উপস্থাপিকা চৈতির একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো প্রকাশ হয়। নির্মাতা এনামুল কবির নির্ঝরের সাথে এই ভিডিয়োতে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায় চৈতিকে। ভিডিয়োটি মোবাইলে রেকর্ডিং করা হয়েছিল। এই আপত্তিকর ভিডিয়ো প্রকাশের পরপরই তুমুল সমালোচনার মধ্যে পড়েন চৈতি। এরপর অনেক দিন মিডিয়ায় দেখা যায়নি এই তারকাকে। নির্মাতা নির্ঝরও উধাও।
মিলাঃ জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মিলা জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করেই তার নাম চলে আসে ভিডিয়ো স্ক্যান্ডালের গুজব। ইন্টারনেটে ‘মিলা’ নামে একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। ৩৩ সেকেন্ডের ঐ ভিডিয়োটিতে মত্ত অবস্থায় থাকা তরুণীর চিত্র রয়েছে। এ ঘটনার কয়েকমাস পর মিলা মুখ খোলেন। তিনি দাবি করেন, প্রকাশিত ভিডিয়োর মেয়েটি তিনি নন। এটি মিলা না হলেও স্ক্যান্ডাল থেকে রক্ষা পাননি তিনি।
নোভাঃ মডেল অভিনেত্রী নোভাকে কেরিয়ারের উঠতি সময়ে বিপাকে ফেলে দেয় একটি ভিডিয়ো ফুটেজ। ২০১০ সালে তার নামে একটি অর্ধ নগ্ন ফুটেজ ছড়িয়ে পরে। তবে ফুটেজটি নোভার কিনা তার সত্যতা মেলেনি।
মেহজাবিনঃ বছরকয়েক আগে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে মেহজাবিনের নামে এক নীলছবির ক্লিপ। মেহজাবিন জানিয়েছেন, এটা তাঁর বিরুদ্ধে একরকম ষড়যন্ত্র।
সারিকাঃ মেহজাবিনের মতো ফেক ভিডিয়ো স্ক্যান্ডালের ফাঁদে পড়েছেন আরেক জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী সারিকা। ইন্টারনেটে বেশ কয়েকটি ওয়েব সাইটে সারিকার নামে একটি পর্নো ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রকাশিত ভিডিয়োর নারী চরিত্রটি সারিকার নয় বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান।
আনিকা কবির শখঃ জনপ্রিয় মডেল আনিকা কবির শখের নামে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে। ভিডিয়ো ক্লিপটি প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথেই এটি নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ভিডিয়োতে বিবসনা নারীটি শখ ছিল না বলে জানা গেছে।
বিদ্যা সিনহা মীমঃ লাক্স সুপারস্টার জনপ্রিয় মডেল অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মীম বেশ ক্লিন ইমেজ নিয়েই মিডিয়ায় ছিলেন। কিন্তু এতে বাধা হয়ে ওঠে একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো ফুটেজ। গত বছর এক বিদেশি ক্রিকেটারের সাথে আপত্তিকর দৃশ্যের এ ফুটেজ প্রকাশ হয়। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে এটা আসলেই তারকা বিদ্যা সিনহা মীম কিনা তা নিয়েও অনেকে সংশয় প্রকাশ করেন।
পড়শীঃ হালের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী পড়শীও রেহাই পায়নি এই সাইবার ক্রাইম থেকে। পড়শীর নাম ব্যবহার করে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। যদিও ভিডিয়োর মেয়েটি যে পড়শীই তা নিশ্চিত হতে পারেনি কেউ।
বিন্দুঃ নাট্যকার-সাংবাদিক অরুণ চৌধুরীকে জড়িয়ে একটি ভিডিয়ো স্ক্যান্ডাল ছড়িয়ে পড়ে। আর এর সাথে যুক্ত হয় জনপ্রিয় টেলিভিশন তারকা বিন্দুর নাম। একটি অফিস কক্ষে গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত এই ভিডিওতে কথিত অরুণ চৌধুরীর সাথে যে নারীটিকে দেখা গেছে সেই নারীটি মডেল বিন্দু বলে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হয়।পরে জানা যায়, ভিডিয়োর তরুণী অভিনেত্রী বিন্দু ছিলেন না।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।