রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় গাম্বিয়ার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার ১২ই মার্চ ২০২৫ ০৯:০২ অপরাহ্ন
রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় গাম্বিয়ার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতার বিরুদ্ধে দায়ের করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় গাম্বিয়ার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মামলার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন।  


২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) এই মামলাটি দায়ের করে। তাদের দাবি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর পরিকল্পিত গণহত্যা চালিয়েছে এবং এটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। মামাদু তাঙ্গারা জানান, তাদের এই উদ্যোগ নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য নেওয়া হয়েছে এবং মামলাটি এখনো চলমান।  


গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশ এই মামলাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টও বিষয়টিকে নজরে রেখেছেন এবং রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, এই মামলা যাতে সফল হয়, সে জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।  


প্রধান উপদেষ্টা মামলাটির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, এটি মানবাধিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে সুবিচার পাওয়া উচিত। তিনি গাম্বিয়ার পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং মামলার সঠিক রূপে উপস্থাপন নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।  


গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, তার নেতৃত্ব এবং বৈশ্বিক সংযোগ রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনের দাবিকে আরও জোরালো করবে। তিনি বলেন, গাম্বিয়ার জনগণ এবং সরকার এই মামলার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এটিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে।  


তাঙ্গারা আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল একটি জাতিগোষ্ঠীর সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি বড় উদাহরণ। এই মামলার সঠিক রায় নিশ্চিত হলে ভবিষ্যতে অন্য কোনো জাতিগোষ্ঠীর ওপর এই ধরনের দমন-পীড়ন চালানোর আগে বিশ্ব সম্প্রদায় সতর্ক হবে।  


প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের সংহতি প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই মামলার সঠিক পরিচালনার জন্য আইনি ও কূটনৈতিক দিকগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এতে যুক্ত করতে হবে।  


রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার সাফল্য শুধু রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বরং সামগ্রিকভাবে বিশ্বে মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে মত দেন আলোচকরা। তারা আশা প্রকাশ করেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে রোহিঙ্গারা তাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবে এবং নিরাপদ জীবনের স্বপ্ন দেখতে পারবে।