মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ধলাইরপার জামে মসজিদে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের সুন্নত পরার সময় হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটে। বশির মিয়া (৬০) নামের এক মুসল্লি নামাজরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত বশির মিয়া দক্ষিণ ধলাইরপার গ্রামের মৃত শফিক মিয়ার ছেলে। তার অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
বশির মিয়ার ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহিম মিয়া জানান, জুমার নামাজ আদায় করতে বশির মিয়া নিয়মিত সময়ের মতো বাড়ির পাশের দক্ষিণ ধলাইরপার জামে মসজিদে যান। সুন্নত নামাজের সময় হঠাৎ তিনি ঢলে পড়েন। উপস্থিত মুসল্লিরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বশির মিয়ার বড় ছেলে রকিব মিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “বাবা প্রতিদিনের মতো নামাজ আদায় করতে মসজিদে গিয়েছিলেন। আল্লাহর ঘরে এমন পবিত্র সময়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এমন মৃত্যু সবার কপালে হয় না। আল্লাহ যেন বাবাকে জান্নাত নসিব করেন।”
স্থানীয়দের মতে, বশির মিয়া ছিলেন অত্যন্ত মহৎ, ন্যায়পরায়ণ এবং ধার্মিক মানুষ। আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলেও সততা ও ন্যায়নীতির প্রশ্নে আপসহীন ছিলেন। তিনি এলাকার একজন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করার ব্যাপারে তিনি ছিলেন নিয়মিত এবং কোনো গাফিলতি করতেন না।
বশির মিয়া ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে পরিবার গভীর শোক এবং দুঃসহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. সাজেদুল কবির বলেন, “বশির মিয়াকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকের কারণে হয়েছে।”
বশির মিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবাই তার সততা, ন্যায়পরায়ণতা এবং ধর্মপ্রাণ জীবনের প্রশংসা করেছেন। তার মৃত্যু স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে এক বিরল উদাহরণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।