দুর্নীতিবাজদের মুখে দুর্নীতির ছবক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ৭ই মার্চ ২০২০ ০৯:০৭ অপরাহ্ন
দুর্নীতিবাজদের মুখে দুর্নীতির ছবক

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কেন্দ্রীয় ঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারীকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ বরাবর পত্র প্রেরণ করেছে। এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন নবগঠিত ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদ। শনিবার (৭ মার্চ) উপাচার্য অফিসে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নব নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ড. রুহুল কুদ্দুস এম সালেহ ও সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা জামাল এর নেতৃত্বে নবগঠিত কমিটি এ প্রতিবাদ জানান। একই সাথে উপাচার্যকে দুর্নীতিবাজ বানিয়ে পত্র প্রেরণকারীরাই দুর্নীতিবাজ বলে পাল্টা দাবি জানান তারা।

এসময় নবগঠিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাঃ সাইদুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ। 

অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন সূত্রে, ৬ মার্চ কেন্দ্র ঘোষিত ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদ এর সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের পক্ষে অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন এর পক্ষে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত একটি পত্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়। 

পত্রে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে, অমান্য করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদ (শিক্ষক ইউনিট) নামে স্বঘোষিত কমিটির সাথে জড়িতরা কোনক্রমেই মুজিবাদর্শের সৈনিক হতে পারে না।এদের কার্যক্রম হীন উদ্দেশ্য এবং ব্যক্তি ও মহল স্বার্থ চরিতার্থ করা উদ্দেশ্য। এই মহলটি আপাদমস্তক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারীকে রক্ষা করার এজেন্ডা দিয়ে মাঠে নামছে।   আরো বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ ঘোষিত কমিটিকে উপেক্ষা করে নতুন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ এর নির্বাচন করায় এদের উচিত শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন। এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ নাম ব্যবহার করায় এদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।        

এ সময় অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, "অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কালো তালিকাভুক্ত হয়েছেন, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক প্রভোস্ট থাকাকালীন দুর্নীতি করেছেন যা তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত, টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান শিক্ষক নিয়োগ, অনিয়ম, হলের প্রভোস্ট থাকাকালীন আর্থিক অনিয়ম ও টিএসসিসি পরিচালনায় ব্যর্থ এসব প্রমাণিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আজকের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কর্মসূচি দিবে যে, কেন বর্তমান প্রশাসন দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।"                                  

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ সেলিম তোহা বলেন,
" ভিসির কোন অপরাধ নেই, অপরাধ একটাই আমার কথা মত চলছিসনা কেন। এ পর্যন্ত যত আওয়ামীপন্থী উপাচার্য আসছে সবাই আমার আঙুলের ইশারায় চলছে তুই এত কি হইছিস এটাই মূল জায়গা। উপাচার্য মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোর জন্য যা করার করবে, যারা ভালোর সাথে থাকে তারা থাকবে। উড়ো কথা বলে কারো ভাবমূর্তি নষ্ট করা যাবেনা। এই হঠকারী ও স্বার্থগত কিছু কারণে কোন উপাচার্য মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।"

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, "দুর্নীতি যে শব্দটি উপাচার্যের সাথে ব্যবহার করা হয়েছে এই শব্দটির সাথে অধ্যাপক ড. রাশীদ আসকারীর নামটি কোন ভাবেই যায় না। এই সাড়ে তিন বছরে আমি এত ভালো ভাবে স্বচ্ছভাবে সততা, দক্ষতার সাথে কাজ করে আসছি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ধরণের কোনো কাজ তার দ্বারা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, অতীতে যতগুলো প্রশাসন আসছে সকল প্রশাসনের রেকর্ড ভেঙ্গে মাত্র সাড়ে তিন বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে সে উন্নয়নের বর্তমান প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তি আসকারী অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। যা অতীতের সকল রেকর্ড শুধু ভঙ্গই করেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর জায়গায় নিয়ে গেছেন। এটা যদি তার অপরাধ হয় তবে বাংলাদেশে আর কোন মানুষ নাই যে মানুষটি তার সমান হতে পারে। কোন নেতিবাচক উচ্চারণ, কোন শব্দ, কোন দুর্নীতির শব্দ যারা লিখেছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কল্পনাপ্রসূত বিষয় উত্থাপন করেছে যা আমরা প্রত্যাখ্যান করি। দুর্নীতির একটা শব্দের সাথে তাকে দেখিনি আমি শাহিনুর রহমান সাক্ষী দিচ্ছি। যদি বলতেই হয় আমাদের সকলকে বলতে হবে।"

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, "ক্ষমতার প্রতি আমার কোন মোহ নেই। আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগের যদি অর্ধেকও প্রমাণ করা যায় সাদা কাগজে ইস্তফা দিয়ে চলে যাবো।"

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব