ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পেছানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। শুক্রবার অনশনের দ্বিতীয় দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েন চার শিক্ষার্থী। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
এর আগে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন পেছানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫ শিক্ষার্থী। সেদিন দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে জগন্নাথ হল ইউনিয়নের ভিপি উৎপল বিশ্বাস এবং জিএস কাজল দাসের নেতৃত্বে রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানান। রাজু ভাস্কর্য কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন তারা। অনশন ও অবস্থান কর্মসূচির ফলে রাজু ভাস্কর্যের সামনের বাইপাস সড়কটি বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক উৎপল বিশ্বাস বলেন, ভোট ও পূজা এক সঙ্গে চলতে পারে না। আমরা এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
তিনি জানান, অনশনের সময় তাদের হলের ছাত্র অপূর্ব চক্রবর্তী ও অর্ক সাহা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া জগন্নাথ হল ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাজল দাস ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক প্রদীপ দাস অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে স্যালাইন দেয়া হয়।
এদিকে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় অনশনস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। অসাম্প্রদায়িক চেতনার দিক বিবেচনায় সিটি নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানান ভিসি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী ও এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ ডাকসু ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা।
অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তবে ৩০ তারিখ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করার আগে নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত ছিল যে, এই তারিখটি কোনো মূল্যবোধ, কোনো চেতনার পরিপন্থী হয় কিনা।
তিনি বলেন, ৩০ তারিখ যে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হল এটি কোনো ব্যক্তি গোষ্ঠী বা জাতি থেকে আসেনি। এটি বানানো। তাই আমি মনে করি যদি আইন-আদালতের কোনো ঝামেলা না থাকে তাহলে অসাম্প্রদায়িক চেতনার দিকটি বিবেচনা করে আর কালবিলম্ব না করে নির্বাচন কমিশনের এই তারিখটি পরিবর্তন করা উচিত।
প্রসঙ্গত, গত ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন দেশব্যাপী উদযাপিত হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা। এ পূজাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন পেছানোর নির্দেশনা চেয়ে ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট রিট খারিজ করে দেন। বৃহস্পতিবার রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।