প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩১
এ বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একযোগে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির। তিনি ফলাফল প্রকাশের পর জানান, এবারের ফলাফল শতভাগ সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়িত হয়েছে।
চেয়ারম্যান বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমরা কোনো বৈষম্য করিনি। কেউ বিশেষ বিবেচনায় পাস পায়নি। শিক্ষার্থীরা যা লিখেছে, সেটিই ফলাফলে প্রতিফলিত হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ ন্যায্য মূল্যায়নের ফল। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে, যাতে শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এবারের পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি ফেল করেছে ইংরেজি বিষয়ে। গত ২১ বছরে এটি সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। সর্বশেষ ২০০৪-০৫ সেশনে এ ধরনের ফল দেখা গিয়েছিল। চেয়ারম্যান জানান, শতভাগ পাসের প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাই ভবিষ্যতে ‘শতভাগ পাস’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনো ক্যাটাগরি থাকবে না।
তিনি বলেন, যারা অকৃতকার্য হয়েছে তাদের প্রতি সহানুভূতি জানাচ্ছি। তারা যেন হতাশ না হয়ে আগামি পরীক্ষায় ভালো করার চেষ্টা করে। শিক্ষা জীবনে ব্যর্থতা মানেই শেষ নয়, বরং নতুন করে শুরু করার সুযোগ।
এবার পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী প্রস্তুতির ঘাটতিতে আশানুরূপ ফল পায়নি। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচিতে পরীক্ষা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে সবচেয়ে কম পাসের হার কুমিল্লা বোর্ডে, সেখানে পাস করেছে ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। রাজশাহীতে পাসের হার ৫৯ দশমিক ৪০, যশোরে ৫০ দশমিক ২০, চট্টগ্রামে ৫২ দশমিক ৫৭, বরিশালে ৬২ দশমিক ৫৭, সিলেটে ৫১ দশমিক ৮৬, দিনাজপুরে ৫৭ দশমিক ৪৯ এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এ বছর ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছিল। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছেলে এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন মেয়ে। সারা দেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।